Cvoice24.com

দুই কারণে ভরা মৌসুমেও চালের বাজার চড়া

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ২৫ মে ২০২৩
দুই কারণে ভরা মৌসুমেও চালের বাজার চড়া

ধান কাটা ও মাড়াই শেষে বোরো চাল আসতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের বাজারে। ভরা মৌসুমে দাম কমতে পারে- দুমাস আগে এমন আশ্বাস দিয়েছিলেন চাল ব্যবসায়ীরা । তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। একমাত্র জিরাশাইল ছাড়া সবধরনের চালের দামই চড়া। দুমাসের ব্যবধানে প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ২শ টাকা। তবে চালের বাজার এই ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে দুই কারণকে দুষছেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বোরোর ভরা মৌসুমে চালে বাড়তি দাম থাকাটা সমীচীন নয়। মিল মালিকদের সিন্ডিকেট ও প্যাকেটজাত করতে বিভিন্ন কোম্পানির চাল মজুদের কারণে চালের দাম কমছে না বলে দাবি করছেন তারা। 

চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী বাজারে পাইকারি চালের আড়ত ও খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিরাশাইল বাদে পাইকারীতে সব ধরনের চালে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ২শ টাকা বেড়েছে। মোটা সিদ্ধ চালে ৫০ টাকা বেড়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ২ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বস্তায় ১শ টাকা বেড়ে পাইজাম সিদ্ধ ২ হাজার ৫শ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ২ হাজার ৫৫০, বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে স্বর্ণা সিদ্ধ ২ হাজার ২শ থেকে ২ হাজার ৩শ টাকা ও পারিজা সিদ্ধ ২ হাজার ৫শ টাকায় ঠেকেছে। 

পাশাপাশি বস্তায় ২শ টাকা বেড়ে জিরা সিদ্ধ ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা ও চিনিগুঁড়া মানভেদে ৬ হাজার ২শ থেকে ৬ হাজার ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বালাম সিদ্ধ ২ হাজার ৪৫০ টাকা, বেতি আতপ ২ হাজার ৪শ টাকা, মিনিকেট আতপ ২ হাজার ৯শ টাকা, কাটারি আতপ ও নাজিরশাইল ৩ হাজার ৮শ টাকা, জিরাশাইল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ১শ এবং মিনিকেট সিদ্ধ ২ হাজার ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন সিভয়েসকে বলেন, ‘বোরোর ভরা মৌসুমে চালের দাম যে হারে কমার কথা ছিল সেভাবে কমেনি। শুধুমাত্র জিরাশাইলের দাম কিছুটা কমেছে। অন্যান্য জাতের চালগুলো আগের মতোই চড়া। 

তিনি বলেন, একদিকে সরকার ৪২ টাকা দরে চাল খরিদ করছে। অপরদিকে মিল মালিকদের সিন্ডিকেট ও বিভিন্ন কোম্পানি প্যাকেটজাত করে বিক্রি করতে চাল মজুদ করছে। ফলে ভরা মৌসুমেও পাইকারি বাজারে চালের দাম ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসছে না।’

এদিকে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা থেকে এবার ৫ হাজার ৩৫ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এরমধ্যে আনোয়ারা উপজেলা থেকে ৪৫৪ মেট্রিকটন, বাঁশখালী থেকে ৮৫৭ মেট্রিকটন, বোয়ালখালী থেকে ১৪২ , চন্দনাইশে ২৬০, ফটিকছড়ি থেকে ৬০১, হাটহাজারী থেকে ৩৪১, লোহাগাড়া থেকে ৩২৪, মিরসরাই থকে ১৩৬, পটিয়ায় ৩০৪, রাঙ্গুনিয়া থেকে ৬৩১, রাউজান থেকে ৩৬৪, সাতকানিয়া থেকে ৫৫০, কর্ণফুলী থেকে ১৪ ও নগরের পাঁচলাইশ থেকে ৪৭ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

অপরদিকে চট্টগ্রাম জেলা থেকে সরকার  ৫৮৬ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সে লক্ষ্য পূরণে চট্টগ্রামের তিনটি রাইস মিলকে দায়িত্বও বণ্টন করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মেসার্স মাস্টার রাইস মিল থেকে ৯৬ মেট্রিকটন, বড় দারোগারহাট এলাকার মেসার্স সাহাব উদ্দিন রাইস মিল থেকে ৭৪ মেট্রিকটন ও ফটিকছড়ি উপজেলার মেসার্স জাবেদ এন্টারপ্রাইজ এন্ড সিদ্ধ অটো রাইস মিল থেকে ৪১৬ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করবে সরকার। 

চট্টগ্রামে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের যাবতীয় নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ধান ও চাল সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চট্টগ্রাম থেকে এবছর ৫ হাজার ৩৫ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। পাশাপাশি চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে তিনটি চালকলকে কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদেরকে চালগুলো সীতাকুণ্ড ও নাজিরহাট এলএসডিতে সরবরাহ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়