Cvoice24.com

ক্যাশ টাকার ঘাটতি, খালি হাতে ফিরছেন গ্রাহক

শুভ্রজিৎ বড়ুয়া, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ক্যাশ টাকার ঘাটতি, খালি হাতে ফিরছেন গ্রাহক

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম নগরের কর্নেলহাট শাখায় চেক ভাঙিয়ে টাকা তুলতে যান স্বপ্না। কিন্তু চেকে ১২ হাজার টাকা থাকায় তা দিতে রাজি নন শাখাটির ক্যাশ অফিসার। পাঁচ হাজার টাকার বেশি দেওয়া যাবে না জানালে স্বপ্না চলে যান শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে। নিজের প্রয়োজন বোঝানোর পর ব্যবস্থাপক তাকে টাকা তোলার সুযোগ করে দেন।

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকের ঘটনা এটি। শাখা ব্যবস্থাপকের তথ্যমতে, আজ (রবিবার) ওই শাখায় প্রয়োজন ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। বিপরীতে তাদের কাছে আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া ৪ লাখ টাকা। ব্রাঞ্চে জমা পড়েছে গ্রাহকের ১২ হাজার টাকা!

শুধু কর্নেলহাট শাখা নয়,  ব্যাংকটির নগরের বেশিরভাগ শাখাতে এমন ঘটনা ঘটছে নিত্য।

কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যাশ টাকা নিয়ে সাময়িক সমস্যা। গ্রাহকেরা আস্থা রেখে অপ্রয়োজনে উত্তোলন না করলে সহসা এ সমস্যা কেটে যাবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সব গ্রাহক উত্তোলন করতে পারবেন। অন্যদিকে, গ্রাহকরাও ‘নাছোড়বান্দা’। আস্থা সংকটের কারণে আমানত তুলে নেবেন যেকোন প্রকারেই! 

একইদিনে ব্যাংকটির নগরের কর্নেলহাট, খুলশী, কাজীর দেউড়ি শাখা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রাহকের তেমন আনাগোনা নেই। ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন অভ্যন্তরীণ হিসাব-নিকাশে। যে কয়েকজন গ্রাহক আসছেন, তাদের অধিকাংশই টাকা তোলা নিয়ে বাক-বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা শান্তভাবেই গ্রাহকদের বোঝাচ্ছেন।

ব্যাংকে টাকা তুলতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক বলেন, ‘৫০ হাজার টাকার একটি চেক নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ওনারা ৫-১০ হাজারের বেশি দিতে রাজি নন।'

আক্ষেপ করে এ গ্রাহক আরো বলেন, ‘ব্যাংকের পরিচালক কে, ব্যবস্থাপনা কারা করছে; এসব তো আমরা দেখি না। প্রয়োজনে টাকা যেন পাই, এজন্য আমরা ব্যাংকে টাকা রাখি। আমাদের ঘরের পাশে যে ব্যাংক থাকে আমরা সেটাতেই লেনদেন করি। এখন আমরা টাকা তুলতে পারছি না।’

দায়িত্বরত একজন ক্যাশ অফিসার বলেন, ‘আমাদের ক্যাশ (নগদ) থাকলে দিতে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু ক্যাশ টাকা না থাকায় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে একটু ধৈর্য ধরতে বলছি।’

কর্নেলহাট শাখা ব্যবস্থাপক মো. নাজিম বলেন, ‘নগদ টাকা হাতে না থাকায় আমরা কিছু সমস্যায় আছি। তবে আশা করছি, এ সংকট থাকবে না। ১ অক্টোবর থেকে নতুনভাবে কিছু একটা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে কি করবে বা পরিকল্পনা কি আছে, তা আমরা এখনও জানতে পারিনি।’

কাজীর দেউড়ি এলাকার মহিলা শাখার কর্মকর্তা নাজনীন বলেন, ‘আমাদের এ সমস্যাটা এতো প্রকট হতো না। আমাদের গ্রাহকরা অধিকাংশ টাকা তুলতে আসছেন। কেউ টাকা রাখছেন না। এছাড়া আমাদের ক্যাশ সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিলেও কেউ ওভাবে সহযোগিতা করছে না। এর অবশ্য একটা অন্যতম কারণ হলো- ব্যাংকিং করতে হলে টাকা জমাও নিতে হবে, তুলতেও হবে। কিন্তু আমাদের গ্রাহকরা তুলতে আসলেও জমা দিতে চাচ্ছেন না।’

প্রসঙ্গটি নিয়ে জানতে চাইলে অন্য একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাংকের প্রতিটি শাখা নিজস্ব টাকা দিয়ে ব্যাংকিং করে থাকে। তবে অনেক সময় বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয়। এজন্য আমরা হেড অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে শাখার পার্শ্ববর্তী অন্য ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে লেনদেন করি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়া বা দেওয়া সংক্রান্ত কাজগুলো হেড অফিসের সিদ্ধান্তেই হয়।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

আরো পড়ুন  

: