বন্দরে কনটেইনার জট কমাতে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসবেন নৌ উপদেষ্টা
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে বিভিন্ন ইয়ার্ডে পড়ে থাকা কনটেইনার সরাতে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঢাকায় ফিরে বৈঠকের কথা জানিয়েছেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ-উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে (চট্টগ্রাম বন্দর) ২০ বছর আগের কনটেইনার পড়ে আছে। ১২-১৪ বছর ধরে গাড়ি পড়ে আছে। এগুলো নিলাম করার কাজ এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড)। আমি এখনো ওদের সঙ্গে কথা বলিনি। জানি না তাদের সমস্যা কি। বন্দরের জায়গা যদি এভাবে ভর্তি হয়ে থাকে তাহলে কার্যক্রম কীভাবে বাড়বে। পোর্টের জায়গা যদি খালি না করে এত কনটেইনার আছে এগুলো আমরা রাখব কোথায়। ফিরে গেলে আমি এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।’
শুধুমাত্র বন্দর নয়, আরও যেসব সংস্থা আছে তাদেরকেও কাজ করতে হবে জানিয়ে নৌ-উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যদি কাজ না করে তাহলে বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজগুলো করতে পারবে না। আমাদের কাছে বিনিয়োগকারী আছে। তারা অটোমেশনে কাজ করতে চায়।’
নৌ-উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম পোর্ট হচ্ছে বাংলাদেশের লাইফলাইন। এ পোর্ট যদি না চলে এবং যে অব্যবস্থপনা ছিল সেটা যদি দূর না হয় আমাদের অর্থনীতির লাইফলাইনে অসুবিধা হবে। সে কারণে আমি গত তিনদিন ধরেই এ পোর্টে ঘোরাঘুরি করছি। আমরা ম্যনুয়ালি থেকে যদি অটোমেশন করতে পারি তাহলে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সময় আরও কমে যাবে। আগে একটি জাহাজ আসলে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতো পণ্য খালাস করতে। এখন সেটা অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই বলে আমরা যে সন্তুষ্ট, তা একদম নয়। অটোমেশন হলে কনটেইনার লোডিং ও আনলোডিং এর সময় আরও কমবে।’
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে এ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বে-টার্মিনালের জায়গাগুলোও দেখে আসছি। আমি এ মূহুর্তে সেটা নিয়ে খারাপ-ভালো বলবো না। আমি আপাতদৃষ্টিতে বে টার্মিনালে কোনো সমস্যা দেখছি না। এখানে বিনিয়োগ করার জন্য অনেকে বিদেশি বিনিয়োগকারী বসে আছে। আগামী বেশ কিছু বছর পরে এ টার্মিনালের যে সম্ভাবনা সেটা দেখতে পাব। আমাদের দিনদিন আমদানি-রফতানি বাড়ছে। সেগুলোও লোড-আনলোড করতে সমস্যা হবে না।’
‘এখানে সৌদি আরব, নেদারল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগ করেছে। বিনিয়োগকে যদি আমরা নিরুৎসাহিত করি তাহলে আমাদের এখানে কিন্তু বাইরের কেউ আসবে না। সিঙ্গাপুরের পোর্ট আর আমাদের বন্দরের মধ্যে কিন্তু তফাৎ আছে। তারা উম্মুক্ত। তারা অনেক এগিয়ে। বন্দরগুলোকে আমরা যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি, বন্দরের ভেতরে যে অরাজকতা ও চোরাচালান আছে সেগুলো যদি বন্ধ করতে পারি তাহলে আমরা অনেক টাকা আয় করতে পারব।’-যোগ করেন নৌ উপদেষ্টা।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলের শেষ দিকে বিদেশি বার্থ অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যদি আমাদের স্বার্থ রক্ষা করে বন্দরের মুনাফা বেশি হয় এবং যারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে তাদের কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আমরা এটা চিন্তা করতে পারি। রাতারাতি এটা হবে না। প্রত্যেক স্টেপ আপনারা জানতে পারবেন। এটা নিয়ে একটি কমিটি হবে। পোর্টের জন্য যেটা ভালো হবে সেটা করা হবে। ২২ বছর ধরে যারা এখানে কাজ করছে তারা কারা? অন্যায়ভাবে অনেক কাজ এখানে হচ্ছে। আর কিছু বলতে চাই না। টেন্ডার এখন আর ডিপিএম পদ্ধতিতে হবে না। এখন ওপেন দরপত্র আহ্বান করা হবে। সেটা আবার আমরা রিভিউ করব। যাতে লোকাল বা বিদেশির মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট লোক যাতে না আসে।’