১৩ বছরে পাওনা জমেছে ১৪৩ কোটি টাকা
বন্দরকে নিলামের ভাগ দেয় না কাস্টমস!
শুভ্রজিৎ বড়ুয়া, সিভয়েস২৪

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) ইয়ার্ডে থাকা পণ্য আমদানিকারকরা খালাস না নিলে তা নিলামে তোলে কাস্টম হাউস। নিলামের রাজস্ব থেকে একটি অংশ পায় বন্দর। কিন্তু ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে চবকের সেই পাওনা দিচ্ছে না কাস্টমস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত নিলাম থেকে কোনো ভাগ পায়নি চবক। কাস্টমসের নিলামে বিক্রি হওয়া পণ্যে ফুল কনটেইনার লোড (এফসিএল) কন্টেইনারে ২০ শতাংশ এবং এলসিএল পণ্যে ১৫ শতাংশ ভাগ পাওয়ার নিয়ম। সর্বশেষ নিরীক্ষার হিসাবে ১৪২ কোটি ৭২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পাওনা থাকলেও তা দিতে গড়িমসি করছে কাস্টমস। বিষয়টি মীমাংসার জন্য এ পর্যন্ত ৫৯টি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চবকের ঊর্ধ্বতন অর্থ কর্মকর্তা মো. শাহ জাহান জানান, নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা পচনশীল পণ্য সাত (৭) দিন এবং সাধারণ যেকোনো পণ্য ৩০ দিনের মধ্যে খালাস নেওয়ার কথা।
তিনি বলেন, 'ওই সময়ের মধ্যে যদি আমদানিকারক পণ্যের খালাস না নেয়, তাহলে পণ্যগুলো বিক্রির জন্য কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যে রাজস্ব আমদানিকারক থেকে পাওয়ার কথা, পণ্য নিলামে উঠলে তা কাস্টমস থেকে পায় বন্দর। কিন্তু ১৩ বছর ধরে কাস্টমস এ রাজস্ব দিচ্ছে না।'
'এজন্য কাস্টমস কমিশনার বরাবরে ৫৮টি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো সাড়া পাইনি। সরকারি অডিট টিমও ওই টাকা আদায় না হওয়ায় আপত্তি তুলেছে। বিষয়টি জানিয়ে কিছুদিন আগে কমিশনার বরাবরে আমরা আরেকটি চিঠি পাঠিয়েছি।’-যোগ করেন চবকের ঊর্ধ্বতন অর্থ কর্মকর্তা শাহ জাহান।
চবক সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দরে থাকা পণ্যগুলো নিলামে বিক্রি হলে সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট ডিউটি ফি পায় বন্দর। ২০১৪ সালের শেষ দিক থেকে সেই ফি বাবদ ১৪২ কোটি ৭২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পাওনা জমেছে।'
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র এবং উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ই-অকশন চালুর পর থেকে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও নিয়মিত নিলাম হচ্ছে। এর মধ্যে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনায় নিলামের গতি বাড়িয়ে বন্দরে স্পেস খালি করা হচ্ছে। নিলাম কার্যক্রমের বিভিন্ন স্টেক-হোল্ডার অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।'
বন্দরের পাওনা নিয়ে কাস্টমস অবগত আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তবে পাওনাগুলো রেগুলার হলে দ্রুত পরিশোধ করা যেত। দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের ভাগ জমতে থাকায় তা পরিশোধের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কনসার্ন প্রয়োজন। কিছুটা দেরি হলেও আশা করি, এবার হয়ে যাবে।’
অর্থ-বাণিজ্য সব খবর