Cvoice24.com

চবিতে করোনার টিকা পাবে কারা?

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ৪ মার্চ ২০২১
চবিতে করোনার টিকা পাবে কারা?

সরকারের নির্দেশনা মেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৪ মে। এর আগে ১২টি আবাসিক হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থী, হল সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিতে হবে করোনা ভাইরাসের টিকা। ইউজিসি ও চবি প্রশাসন বলছে, যারা বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী, ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আগে কেবল তাদেরকেই টিকার আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে আবাসিক হলগুলোতে থাকা বৈধ শিক্ষার্থীদের তালিকা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী ৬ মার্চের মধ্যে নেওয়া হবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন প্রক্রিয়ায় চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে অনেক শিক্ষার্থীর কপালে। কেননা দীর্ঘ তিন বছর ধরে হলে নতুন আসন বরাদ্দ দেয়নি চবি প্রশাসন। পূর্বের বরাদ্দকৃত অধিকাংশ আবাসিক শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করায় তারা হল ছেড়েছেন। বর্তমানে হলগুলোতে অবস্থানকারী অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীরেই নেই কোনো বৈধ অনুমতিপত্র বা কার্ড। অনেকে আবার থাকেন বিশেষ অনুমতি নিয়ে। 

আবাসিক শিক্ষার্থীদের তথ্য ও করোনা টিকা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়ে গতকাল শনিবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের প্রভোস্টদের একটি বৈঠক হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সিভয়েসকে বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী আবাসিক তারা সবাই টিকা পাবেন। এরমধ্যে অনেকে সাময়িক ও বিশেষ অনুমতি নিয়ে হলে থাকছেন তাদেরকেও টিকার আওতায় আনা হবে। কিন্তু যেসব শিক্ষার্থীকে হলে থাকার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি, তারা টিকা পাবে না।’

অধ্যাপক মনিরুল হাসান আরও বলেন, ‘নতুন করে কোনো আসন বরাদ্দ দেওয়া আপাতত সম্ভব হবে না। তাই হলের প্রভোস্টের অনুমতি নিয়ে যারা আসন বরাদ্দ পাওয়ার কথা তাদেরকে করোনা টিকা দেওয়া হবে। আবার সরকার চাইলে সব শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হতে পারে।’ 

ইউজিসির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২২ হাজার ৯০২ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১২টি আবাসিক হলে আসন রয়েছে ৪ হাজার ৯০০টি, যা মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ২১ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০১৯ সালের ১৩ জুন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই দফায় আসন বরাদ্দের প্রক্রিয়া চললেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি কোনো এক অজানা কারণে। 

এদিকে ২০১৭ সালের জুন মাসে হওয়া আসন বরাদ্দের হিসাব মতে, চবির ছাত্র হলগুলোর মধ্যে শাহজালালে ৪৭৫টি আসনের বিপরীতে ৫৫০; শাহ আমানতে ৫৩০টি আসনের বিপরীতে ৮৫০; আলাওলে ২৬০টি আসনের বিপরীতে ২৮৫; এ এফ রহমানে ২৫৭টি আসনের বিপরীতে ২৯০; সোহরাওয়ার্দীতে ৩৬০টি আসনের বিপরীতে ৩৯৫; শহীদ আব্দুর রবে ৫০৯টি আসনের বিপরীতে ৫২০ এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ১৭৬টি আসনের বিপরীতে ১৮০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। 

অন্যদিকে ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে শামসুন নাহারে ৪৮১টি, প্রীতিলতায় ৫৩১টি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ায় ৫০৮টি, জননেত্রী শেখ হাসিনাতে ৭৫০টি (আংশিক নির্মাণাধীন), মাস্টারদা সূর্যসেনে (আংশিক) ৩৯টি আসন রয়েছে। 

সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট মাইনুল হাসান চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের আবাসিক শিক্ষার্থীরা তাদের তথ্য জানাবে। আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে হলে রাখা তথ্য যাচাই করা। তবে অনেক আবাসিক শিক্ষার্থী হলে থাকে না। আবার যারা বিশেষ অনুমতি নিয়ে হলে থাকে তাদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আমার ধারণা, নিশ্চয়ই এ সমস্যাগুলোর সমাধান করবে প্রশাসন।’  

আবাসিক হলে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী সিভয়েসকে জানান, হলে আসনের সংকট থাকায় একসিটে দুজন করে থাকতে হচ্ছে অনেককেই। অন্যদিকে যারা হল ত্যাগ করেছেন সেই সিটগুলোতে বিশেষ অনুমতি নিয়ে অনেকে নতুন করে হলে থাকেন।

এদিকে ছাত্র হলগুলোতে তিনবছর ধরে বরাদ্দ না হওয়ায় নতুন করে কেউ আসন পাননি। ক্ষেত্র বিশেষে বিশেষ অনুমতি নিয়ে অনেকে হলে আছেন। আবার অবৈধভাবে অবস্থান করছেন কয়েকশ ছাত্র। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খালি হওয়া আসনগুলো দখল নিতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ উপগ্রুপগুলোর মধ্যে চলে কোন্দল ও মারামারি।  

ক্লাস-পরীক্ষার আগে টিকা গ্রহণ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট রবিউল হাসান ভূঁইয়া সিভয়েসকে বলেন, ‘আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের তথ্য ইউজিসিতে পাঠানো হবে। এরপরে তাদের নির্দেশক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন বরাদ্দ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা হল কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে থাকেন তাদেরকেও এ তালিকায় যোগ করা হবে। আমাদের আইসিটি বিভাগের মাধ্যমে আবাসিক শিক্ষার্থীদের নাম, হলের নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, সেশন, বিভাগ, পরিচয়পত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যগুলো দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে। এরপরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তা অনুমোদন হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়