Cvoice24.com

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি, বাইরে জটলা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:০৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি, বাইরে জটলা

দীর্ঘ প্রায় সতেরো মাস পরে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও খুলেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশমুখে থার্মাল স্ক্যানার, ক্লাসরুমে সামাজিক দূরত্ব আর মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা মানা হলেও বাইরে ছিল অভিভাবকদের জটলা। 

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ চিত্র দেখা গেছে নগরের ডা. খাস্তগীর বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজে, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ, কুসুমকুমারি সিটি করপোরেশন বালিকা  উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাঁহ মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে। 

যদিও গতকাল শনিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে অভিভাবকদের বাইরে জটলা না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে এসব ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।

প্রবেশের সময় আর শ্রেণিকক্ষে স্বাস্থ্যবিধির উপর জোর দিতে দেখা গেলেও ছুটিশেষে শিক্ষার্থীরা জটলা পাকিয়ে আড্ডায় মেতে উঠেছিল ফাঁকা আঙিনায়। দীর্ঘদিন পর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় এই আড্ডায় ছাড় ছিল শিক্ষকদেরও।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা। কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজে দেখা গেছে, থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা মেপে মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। নিরাপত্তা কর্মীরা স্প্রে করছেন স্যানিটাইজার। প্রবেশমুখেই রাখা হয়েছে বেসিন। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে হাত ধোয়া নিশ্চিত করছেন শিক্ষকরা। প্রতিবেঞ্চের দু মাথায় দুজন। ​শুরুতে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে স্কুলকর্তৃপক্ষের এতো আয়োজন ধুলিস্যাৎ বাইরে অভিভাবকদের জটলা আর ভ্রাম্যমাণ হকারের দোকানে।

একই চিত্র সরকারি খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে। বাইরে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের জটলা। ছোট ছোট জোট বেধে গল্প করছেন কেউ কেউ। আবার কেউ  স্কুল গেটে মাথা উঁচিয়ে উঁকি দিচ্ছেন মেয়েকে নেয়ার জন্য। আবার আর কিছু জটলা বেঁধেছে ভ্রাম্যমাণ ফুচকা, ঝালমুড়ি বিক্রেতাদের ঘিরে। স্কুল থেকে বেরিয়ে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীরা সেখানে বান্ধবীদের নিয়ে ফুচকা-ঝালমুড়ি নিয়ে আড্ডায় মেতেছে।

অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ের ভেতরে সন্তানের অপেক্ষমান অভিভাবকদের জন্য বসার কোন ব্যবস্থা না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ ছুটির অব্যবস্থাপনাকেও দুষছেন।

কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সানজিদা মোখতার তানজিন জানান, আজ কলেজ শাখায় দুই সেশনে ৮৭৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮৮ জন উপস্থিত ছিল। গড়ে উপস্থিতি হার ছিল ৬২ শতাংশ। 

বাইরে-ভেতরে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের জটলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানানোর বিষয়টি শতভাগ পালন করা হচ্ছে। তবে ছুটির সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সামাজিক দূরত্ব মানছে না। তাই ক্লাসের রুটিন কিছুটা পরিবর্তন করে সামাজিক যোগাযোগ মানানোর চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, আমরা অভিভাবকদের অনুরোধ করেছিলাম সন্তানদের স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে। সামাজিক দূরত্ব মানাতে। কিন্তু অনেকে সেই অনুরোধ না মেনে স্কুলের সামনে জটলা করেছে। তবে সব স্কুলে তা নয়, কয়েকটি বড় স্কুলের সামনে অভিভাবকরা জটলা করেছে। আগামীকাল থেকে গেটের সামনে কেউ যাতে জটলা না করে সেই ব্যবস্থা করবো।

ছুটির সময় শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের জটলা প্রসঙ্গ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মমিনুর রহমানের নজরে আনলে তিনি সিভয়েসকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অভিভাবকদের জটলা না করতে বারবার করে অনুরোধ করেছিলাম। অভিভাবকরা অনুরোধ না মেনে জটলা করেছে। অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে এসব বিষয়ে। আগামীকাল থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সচেতনতা প্রচারণা চালানো হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাবল টিভিকেও প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হকারকে ঘিরে জটলার বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার কথাও জানান তিনি।

-সিভয়েস/কেকে/এএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়