Cvoice24.com

চবির ছাত্ররা ‘হলে’, ছাত্রীদের বেলায় অজুহাত

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
চবির ছাত্ররা ‘হলে’, ছাত্রীদের বেলায় অজুহাত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আবাসিক হল বন্ধ রেখেই পরীক্ষা নেওয়ার শর্তে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে চরম দুর্ভোগ ও বেকায়দায় আছেন ছাত্রীরা। ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় মেসের স্বল্পতা, খাওয়া-দাওয়ার সমস্যা ও নিরাপত্তার অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রীরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫টি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ইতোমধ্যে পরীক্ষার তারিখ ঘোষিত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর পরীক্ষায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসের আশপাশের বিভিন্ন মেস-বাসা বাড়িতে কয়েক হাজার নারী শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে। হল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া গুনে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে মেস-বাসা বাড়িতে অবস্থান করছেন তারা। ছাত্রীদের প্রশ্ন, ছাত্ররা হলে থাকলেও ছাত্রীদের বেলায় প্রশাসনের অজুহাত কেন?

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ১০ হাজার। এদের মধ্যে আড়াই হাজার ছাত্রী আবাসন সুবিধা পান। বাকিরা ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকার মেস-বাসা বাড়ি ও চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করেন।

এদিকে সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী এখন মেসে অবস্থান করছেন। ফলে থাকার জায়গা খুঁজে পেতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ছাত্রীরা। ছেলেরা কোনোরকম আবাসন ব্যবস্থা করে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলেও মেয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আবাসন ব্যবস্থা একটি বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার ছাত্রীদের মেসগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় রয়েছে ঝুঁকিও।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে রোববার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবেন ভুক্তভোগীরা।

অন্যদিকে হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেস বা বাসা মালিকরাও ভাড়া বাড়িয়েছেন ইচ্ছে মতো, যা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার বেশি ভাড়া দিয়েও সিট পাচ্ছেন না অনেকে। ফলে বিপাকে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আগত ছাত্রীরা।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া নাওমি সিভয়েসকে জানান, অধিকাংশ বিভাগে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় মেস সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক কষ্টে মেস খুঁজে পেলেও ভাড়া নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। এছাড়া নিরাপত্তা, খাবার ব্যবস্থাপনা, পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী নাতাশা ইসলাম বলেন, ‘আমরা যারা হলে অবস্থান করে আসছিলাম তাদের জন্য মেসে থাকা কষ্টকর। এখানে সব সুযোগ-সুবিধার অভাব। সম্প্রতি পরীক্ষার ডেটও দিয়েছে। থাকার জায়গার অভাবে ক্যাম্পাসে যেতে পারছি না। পড়াশোনা হচ্ছে না।’

হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আরেক শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘ছাত্ররা হলে থাকতে পারে, মেয়েদের বেলায় অজুহাত। করোনা কি শুধু মেয়েদের হলে? অন্তত আমরা যারা দুই ডোজ টিকা দিয়েছি এবং যারা পরীক্ষার্থী শুধু তাদের জন্য হল খুলে দেওয়া যায় না?’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া সিভয়েসকে বলেন, ‘ছাত্রীদের সমস্যা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। গতকালের সিন্ডিকেটে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে অক্টোবরে এক ডোজ টিকা সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেয়া হবে। আশা করছি হল খুলে দিলে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’ এছাড়া কোনো ছাত্রী হয়রানির শিকার হলে প্রক্টরকে জানানোর তাগিদ দেন ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।

-সিভয়েস/এমআর/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়