Cvoice24.com

বিধি লঙ্ঘন করে পদোন্নতি বোর্ডে চবির প্রক্টর, ডিনের পদত্যাগ

সিভয়েস প্রতিদেক

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ২৫ নভেম্বর ২০২১
বিধি লঙ্ঘন করে পদোন্নতি বোর্ডে চবির প্রক্টর, ডিনের পদত্যাগ

বিধি লঙ্ঘন করে পদোন্নতি বোর্ডে চবির প্রক্টর

নিময়-নীতির তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পদোন্নতি বাের্ডে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছে প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) উর্ধ্বতন সহকারী/ সমমানের পদ থেকে সেকশন অফিসার/ সমমানের আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে নিয়ােগের জন্য গঠিত নির্বাচনী বোর্ডের সভা রয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সভায় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছাড়া উপাচার্য নিজস্ব ক্ষমতাবলে ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখার অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে এটিকে অবৈধ ও বেআইনি বলে মত দিয়েছেন একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।

এদিকে নিয়ােগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগত কতিপয় ত্রুটির কারণে আইনি জটিলতার কারণ দেখিয়ে নির্বাচনী বাের্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম সালামত উল্লাহ ভূঁইয়া।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, অফিস, বিভাগ, ইনস্টিটিউট হলে উর্ধ্বতন সহকারী, সমমান পদ থেকে সেকশন অফিসার, সমমান পদে আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে নিয়োগের জন্য দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। এতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম সালামত উল্ল্যা ভূঁইয়া এবং সিন্ডিকেট সদস্য, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজকে। কিন্তু সিন্ডিকেটের কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে পদোন্নতি বোর্ডে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রক্টরকে রাখা হয়। এছাড়া আজ অনুষ্ঠিত বোর্ডে প্রায় ১০০ জনের পদোন্নতি পদপ্রার্থী থাকলেও সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদেরকে ৫৮ জন ডকুমেন্ট দিয়েছে প্রশাসন। বাকি ৪২ জনের মতো পদপ্রার্থীর কোনো ডকুমেন্ট পাননি সিলেকশন বোর্ডের সদস্যরা।

বিষয়টি নিয়মবহির্ভূত দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, ‘যতজনের পদোন্নতি হবে ততজনের সব ধরনের ডকুমেন্ট সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদেরকে দিতে হয়। যাতে সদস্যরা পদোন্নতি প্রত্যাশী প্রার্থীদের সব ধরনের পদোন্নতির শর্ত পূরণ হয়েছে কিনা তা জানতে পারেন। এটাই বিধিবদ্ধ নিয়ম। কিন্তু প্রশাসন ৫৮ জনের তথ্য সিলেকশন বোর্ডের সদস্যদের দিলেও বাকি অনেকেরই তথ্য দেননি। যা নিয়ােগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে আইনি জটিলতা থেকে যাচ্ছে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আদেশক্রমে আপনাকে জানাচ্ছি যে, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, অফিস, বিভাগ, ইনস্টিটিউট হলে উর্ধ্বতন সহকারী, সমমান পদ থেকে সেকশন অফিসার, সমমান পদে আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে নিয়োগের জন্য নির্বাচনী বোর্ডের এক সভা ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় ড. এ. আর. মল্লিক ভবনে (প্রশাসনিক ভবন) মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলরের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। উক্ত নির্বাচনী বোর্ডে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমন্ত্রণক্রমে উপস্থিত থাকার জন্য সংশিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়।

প্রক্টরকে নিয়োগ বোর্ডে রাখার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলেন, ‘ভাইস চ্যান্সেলর নিজস্ব ক্ষমতা বলে চাইলে সবকিছু করতে পারে না। একটি বিধিবদ্ধ নিয়ম আছে। আর সিন্ডিকেটকে বাইপাস করে তিনি কিভাবে প্রশাসক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বোর্ডে থাকার অনুমোদন দেন?’

অন্যদিকে সভা শুরু হওয়ার আগেই বোর্ডের সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক সালামত উল্ল্য ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি পদত্যাগের কথা জানান।

পদত্যাগ পত্রে নিয়ােগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগত কতিপয় ত্রুটির কারণে আইনি জটিলতা ও সামাজিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

পদত্যাগের বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি অধ্যাপক এস এম সালামত উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘আমি চিঠিতে সব উল্লেখ করে দিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘অধ্যাপক এস এম সালামত উল্লাহ ভূঁইয়ার পদত্যাগ পত্র পেয়েছি। ওনার (এস এম সালামত উল্লাহ ভূঁইয়া) কাছ থেকে পদত্যাগের কারণটা জেনে নেন।’

পদোন্নতি বোর্ডে প্রক্টরকে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখার বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘ভাইস চ্যান্সেলের চাইলে যে কাউকে বোর্ডে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। এটা সব সময় হয়ে আসছে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়