Cvoice24.com

ট্রান্সক্রিপ্টকাণ্ডে শোকজ খেলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০৪, ২৯ মার্চ ২০২২
ট্রান্সক্রিপ্টকাণ্ডে শোকজ খেলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।

ভুল তারিখে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ছাপার কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে। 

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল আলীম এক চিঠিতে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাকে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি না নিয়ে নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করে কর্মস্থল ত্যাগ করার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টে ভুল তারিখ মুদ্রণ হওয়ায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড ও সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে এবং চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে বিতরণকৃত ভুল তারিখে ছাপানো ট্রান্সক্রিপ্ট শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এ ব্যাপারে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা লিখিতভাবে জানাতে হবে।

১৯৬১ সালের পরীক্ষাবিধি অনুযায়ী, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় দায়-দায়িত্ব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের উপর থাকে বিধায় বোর্ডের শীর্ষ এ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।

২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৪০ হাজারেরও বেশি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ভুল তারিখে ছাপায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা শাখা। গতকাল সোমবার ঘটনাটি নজরে আসে কর্তৃপক্ষের। এ ঘটনা নিয়ে ‘চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষার ৯ মাস আগেই ফল!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে সিভয়েস।

এদিকে, গতকাল (২৮ মার্চ) পর্যন্ত কি পরিমাণ ২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্ট ছাপানো হয়েছে এবং কি পরিমাণ বাকি রয়েছে তা জানাতে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পক্ষে বিভিন্ন কর্মকর্তার মাধ্যমে কতগুলো ট্রান্সক্রিপ্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং কতগুলো এখনো অপেক্ষমান রয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘সামনে দুটো পাবলিক পরীক্ষা আছে। যেহেতু পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্মের একমাত্র হর্তাকর্তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। সেহেতু দায়বদ্ধতা তারই সবচেয়ে বেশি। কোনোভাবেই তিনি তা এড়াতে পারবেন না এবং বারংবার ভুল করার পরেও সামনের পরীক্ষাগুলো উনার হাতে কতটা নিরাপদ তা সহজেই অনুমেয়। বিশেষ করে গত পরীক্ষা থেকেই উনার (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) ভুলগুলো প্রকাশ্যে আসছে বেশি। আবার গতবারের পরীক্ষায় সেটার ও মডারেটর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামনে আবার এসব কাজকর্ম শুরু হবে। বারবার যদি এমন ভুল হয় তাহলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সুনাম কোন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে!’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল। তবে গেল বছরের ফেব্রুয়ারির তারিখ দিয়ে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ছাপায় বোর্ডের পরীক্ষা শাখা। এর আগে ফলাফল প্রকাশের দিন ওয়েবসাইটে ফলাফলে অসঙ্গতি দেখায়। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটিও করে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৫ মার্চ সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না বোর্ডের কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়