Cvoice24.com

চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় প্রাথমিকের বই পৌঁছেনি ২ লাখের বেশি

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:০৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় প্রাথমিকের বই পৌঁছেনি ২ লাখের বেশি

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর কেটে গেছে গোটা পাঁচ সপ্তাহ। এখনো চট্টগ্রামের চার উপজেলায় পৌঁছায়নি প্রাথমিকের সব বই। যেখানে বছরের শুরুর দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই থাকার কথা। সেখানে ৩৫ দিনেও পৌঁছায়নি তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির চারটি বিষয়ের দুই লাখেরও বেশি বই। এবছর চট্টগ্রামে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিকে পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ছিল ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ২৯৭টি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন— একটি ছাপাখানা সংস্থার কাছেই আটকে আছে এ বইগুলো। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরেও ছাপার কাজ শেষ না হওয়ার অজুহাতে বই পাঠাচ্ছে না ওই প্রতিষ্ঠানটি। আর এ কারণেই প্রাথমিকের চার বিষয়ের বই পায়নি চার উপজেলার শিক্ষার্থীরা। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে চলে যাবে বলে আশ্বাস দিলেও এখনো বই আটকে আছে ছাপাখানায়। 

জানা গেছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত বই পৌঁছেছে চাহিদার ৯৫ শতাংশ যা সংখ্যায় ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৩টি। এসব বই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্কুলে স্কুলে। তারমধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৪টি বই পায়নি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং কর্ণফুলী উপজেলার ৫২২ স্কুলের শিক্ষার্থীরা। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, ফটিকছড়ি উপজেলার ২২৯টি স্কুলের তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির তিনটি বিষয়ের বই আসেনি। তারমধ্যে তৃতীয় শ্রেণির শুধু গণিত, চতুর্থ শ্রেণির গণিত ও বিজ্ঞান এবং পঞ্চম শ্রেণির বাংলা ও গণিত বই পায়নি শিক্ষার্থীরা। পটিয়া উপজেলার ১৫২টি স্কুলের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির তিনটি বিষয়ের বই আসেনি। এরমধ্যে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা ও গণিত, চতুর্থ শ্রেণির গণিত ও বিজ্ঞান এবং পঞ্চম শ্রেণির বাংলা ও গণিত বই। বোয়ালখালী উপজেলার ১০৭টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চার বিষয়ের বই পায়নি। তারমধ্যে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞান এবং চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি, গণিত, ও বিজ্ঞান বই রয়েছে। কর্ণফুলী উপজেলার ৩৪টি বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তিনটি বিষয়ের বই পায়নি। তারমধ্যে তৃতীয় শ্রেণির বাংলা ও গণিত বই, চতুর্থ শ্রেণির বাংলা ও বিজ্ঞান বই এবং পঞ্চম শ্রেণির বাংলা ও গণিত বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, চট্টগ্রাম জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ পেয়েছে সাগরিকা প্রিন্টার্স, অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস, বর্ণশোভা প্রিন্টার্সসহ আরও বেশি কিছু প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে কেবল বর্ণশোভা ছাড়া অন্য সব প্রতিষ্ঠানের বই চলে এসেছে। প্রায় আড়াই লাখের কাছাকাছি বই ছাপার কাজ শেষ না হওয়ার অজুহাতে পাঠায়নি বর্ণশোভা প্রিন্টার্স নামের প্রতিষ্ঠানটি। 

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এরা সরকারের চাইতেও শক্তিশালী। তাদেরকে বারবার তাগাদা দিয়েও লাভ হয়নি। তারা কারও কথাই শুনে না। স্বজনপ্রীতি করে দরপত্র পেয়ে যায়। আর মানের কথা নাই বা বলি। শুধুমাত্র তাদের প্রকাশনীর বইগুলো আমরা এখনো হাতে পাইনি। কখন বা কবে পাঠাবে সেটাও ঠিকঠাক করে বলছে না তারা।’

অন্যদিকে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কাগজের সংকট ও লোডশেডিংয়ের কারণে এ বছর পাঠ্যবই মুদ্রণে প্রথম থেকেই ধীরগতি ছিল। এ ছাড়া বই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি করা, ভালো মানের মণ্ডের সংকট, প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম দামে কাজ নেওয়াসহ কয়েকটি কারণে সঠিক সময়ে সব বই ছাপানো যায়নি। যার কারণে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সব বই পায়নি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। 

জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলামের যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী মনিটরিং অফিসার মো. নুর মোহাম্মদ সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের ৯৫ দশমিক ২ শতাংশ বই এসেছে। যা এসেছে তা সব স্কুলে স্কুলে পৌঁছানো হয়ে গেছে। শুধুমাত্র চট্টগ্রামের চারটি উপজেলার কিছু অংশের সব বই আসেনি। কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে আশা করছি।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়