পটিয়ায় ১৫৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ ফান্ডের টাকা ‘নয়-ছয়’
সিভয়েস২৪ ডেস্ক
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ১৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষায় প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর অনুকূলে স্লিপ (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান) ফান্ডের বাড়তি টাকা নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে। স্লিপফান্ডের এ বাড়তি টাকা নিয়ে নয়-ছয় করার এ অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক।
জানা গেছে, পটিয়া উপজেলায় ১৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৩০-৩৫ হাজার শিক্ষার্থী চলতি তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষায় শুরু হয়ে শেষ হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর।
পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন ধরনের ফি নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও, উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশক্রমে ছাত্র সংখ্যার ভিত্তিতে স্লিপফান্ড হিসেবে প্রতি শিক্ষার্থী কাছ থেকে ১৪ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকদের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী উপজেলায় স্কুল থেকে স্লিপফান্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রতি ৮-১০ টাকা করে নেয়। কিন্তু পটিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নিচ্ছে ১৪ টাকা করে। শিক্ষকরা জানান, অন্য উপজেলা থেকে এ বাড়তি টাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে নয়-ছয় করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, এ প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা সম্পাদনে একটি কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু স্লিপফান্ডের বাড়তি এ টাকা নয়-ছয় করতেই উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল মজিদ এর কোন তোয়াক্কাই করছেন না।
শিক্ষকরা মনে করেন, এ বাড়তে অর্থ আত্মসাৎ করতেই প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা সম্পাদনে কমিটি গঠনে এমন অনীহা ও একগুয়েমি ভাব দেখাচ্ছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল মজিদ জানান, আমি কোন বাড়তি টাকা নিচ্ছি না। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, খাতা ক্রয় ও প্রশ্নপত্র তৈরিসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের খরচ বাবদ এ টাকা নেয়া হচ্ছে। অন্য উপজেলা থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা সম্পাদনে কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখানে কমিটি গঠনের কোন প্রয়োজন নেই।
তার এ বক্তব্যের জবাবে বিভিন্ন শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল মজিদ ও সহকারি শিক্ষা অফিসার মো. আলাউদ্দীনের যোগসাজস ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ খাতসহ বিভিন্নভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
এদিকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বোয়ালখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও) হারুনুর রশিদ জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার জন্য আমরা শিক্ষা অফিস বিভিন্ন বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড থেকে ছাত্রপ্রতি সর্বসাকূল্যে ১০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, খাতা ক্রয়সহ যাবতীয় খরচ বাবদ আমরা এ টাকাগুলো নিয়ে থাকি।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও বার্ষিক পরীক্ষার এসব কাজ সম্পাদনে ৭ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সভাপতি, সিনিয়র সহকারী শিক্ষা অফিসার সদস্য সচিব ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে রয়েছেন। তারাই প্রান্তিক পরীক্ষার সার্বিক বিষয়গুলো দেখভাল করেন।