Cvoice24.com

নায়ক ফারুক আর নেই

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৫ মে ২০২৩
নায়ক ফারুক আর নেই

বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত নায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) আর নেই। 

সোমবার (১৫ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ছেলে শরৎ বলেন, আজ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে আব্বু মারা গেছেন। আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।

সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে প্রায় দুই বছর চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

২০২১ সালের ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যান অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুক। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিস্ক, স্নায়ুতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। চার মাস ছিলেন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ)। সেমি কোমায় কেটেছে আরও চার মাস। 

তবে দীর্ঘ অসুস্থতা কাটিয়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে কিছুটা সুস্থ হয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী ফারহানা পাঠান। গত মার্চে তাদের দেশে ফেরার কথা ছিল।

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। এরপর ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘মিয়া ভাই’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

অভিনয়ের জন্য ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ফারুক। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।


রাষ্ট্রপতির শোক
সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের ডেপুটি প্রেস সচিব ইমরানুল হাসানের পাঠানো এক শোক বার্তায় তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেন।

এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, চিত্রনায়ক ফারুকের মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। চলচ্চিত্র অঙ্গনে তার অবদান দেশের মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। 

রাষ্ট্রপতি মরহুম আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রীর শোক
চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের চলচ্চিত্রে নায়ক ফারুক এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতি ও সংস্কৃতি অঙ্গনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

‘ফারু‌কের অভিনয়শৈলী মানুষ অনেক দিন মনে রাখবে’
বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত চিত্রনায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এক শোকবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিত্রনায়ক ফারুক আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাতৃভূমির জন্য অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

ড. মো‌মেন ব‌লেন, বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান বিশেষ করে তার অভিনয়শৈলী দেশের মানুষ অনেক দিন মনে রাখবে। সংসদ সদস্য হিসেবেও তিনি জনসাধারণের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শোকবার্তায় মরহুম আকবর হোসেন পাঠানের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শোক

বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সরকারের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। 
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক পৃথক শোকবার্তায় তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মন্ত্রীদের মধ্যে আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। 

প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের মধ্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

‘অসাধারণ এক দেশপ্রেমিককে হারালাম’ 
ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য, প্রখ্যাত অভিনয় শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, অভিনেতা ফারুকের মৃত্যুতে দেশ একজন প্রখ্যাত অভিনয় শিল্পী ও অসাধারণ দেশপ্রেমিককে হারালাম। এ শূন্যস্থান সহজে পূরণ হওয়ার নয়।

সোমবার (১৫ মে) এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, নিকটাত্মীয়, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন ডিএনসিসি মেয়র।

শোকবার্তায় মেয়র বলেন, ফারুক স্কুল জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন জাতির গর্বিত সন্তান।

মেয়র আরও বলেন, চিত্রনায়ক ফারুক দেশের অভিনয় শিল্পে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি তাঁর মেধা ও মনন দিয়ে অভিনয় শিল্প সমৃদ্ধ করেছেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সদস্যের সম্মাননা পান। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন প্রখ্যাত অভিনয় শিল্পী ও অসাধারণ দেশপ্রেমিককে হারালো, এ শূন্যস্থান সহজে পূরণ হওয়ার নয়।

 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়