Cvoice24.com

এলিটকে নিয়ে ‘অপপ্রচার’ ও কয়েকটি প্রশ্ন

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ১৬ নভেম্বর ২০২০
এলিটকে নিয়ে ‘অপপ্রচার’ ও কয়েকটি প্রশ্ন

ছবি: সিভয়েস

একটা মহল বা গোষ্ঠী গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন, নিয়াজ মোরশেদ এলিটের পিতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফ বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। ছেলে কোনদিন ছাত্রলীগ বা যুবলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না, তিনি কিভাবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারে?

নিয়াজ মোরশেদ এলিট, ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগ কিংবা পরবর্তীতে যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল কিনা এটা আমার জানা নেই। তবে কেউ প্রমাণও করতে পারবে না তিনি ছাত্রদল কিংবা বিএনপি-জামাতের কোনো অঙ্গসংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। 

কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়ে বলতে পারেন, বাবা যেহেতু বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত, ছেলে নিশ্চয় কোনকালে বিশেষ করে ছাত্রাবস্থায় বিএনপির ছাত্র সংগঠন করতো বা সমর্থন করতো। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এ ধরনের মন্তব্য করতে দেখেছি। 

আপনাদের উদ্দেশে একটা তথ্য দিই, আমি যতটুকু জানি বা শুনেছি, এলিটের ছাত্রাবস্থায় পিতা ইউসুফ আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। আমরা যাকে মিরসরাই তথা বর্তমান চট্টগ্রামের অভিভাবক হিসেবে জানি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি তার খুব কাছের মানুষ ছিলেন। এই তথ্যটা আপনারা হয়তো জানেন না, তাই অবশ্যই আপনাদের নেতাদের কাছ থেকে জেনে নেবেন। 

এলিটের পিতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফ কেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন? যতটুকু জেনেছি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির সাথে রাজনৈতিক কোন কারণে মনমালিন্য হওয়ায় রাগ ও ক্ষোভ করে আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। এটা তিনি ঠিক করেননি বলে আমি মনে করি। 

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি মনিরুল ইসলাম ইউসুফ সঠিক রাজনৈতিক আদর্শে আদর্শিত নয়। যদি উনি সত্যিই বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতেন, আওয়ামী লীগকে ভালবাসতেন তাহলে কোনোদিন বিএনপির রাজনীতি সাথে যুক্ত হতেন না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে পারতেন। সত্যি কথা বলতে কি, আমার মনে হয়েছে এটা ওনারও ক্ষমতার লোভ অর্থাৎ মিরসরাই থেকে সংসদ সদস্য কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসার আকাঙ্ক্ষা ছিল।

আবারও এলিটের কথায় ফিরে আসি। নিয়াজ মোরশেদ এলিট চাইলে পিতার বর্তমান রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে পারতেন। হলে হয়তো বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনে ভালো পদ-পদবিও পেতেন। 
কেউ কেউ যুক্তি দেখাতে পারেন, আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় বিএনপির পদ দিয়ে কি করবে এলিট? 

নিয়াজ মোরশেদ এলিট যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত কিংবা শেখ হাসিনাকে নেত্রী হিসেবে মান্য করে সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় গত সংসদ নির্বাচনের সময়। দেশবাসী দেখেছেন, বাংলাদেশের সব মিডিয়াতে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল- পিতাকে ভোট না দিতে ছেলের অনুরোধ। 

গত সংসদ নির্বাচনে এলিটের পিতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফ চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। যদিও এলিট নিজেও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন পাননি। তিনি জনগণের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে বলেন, ‘আমার পিতা মনিরুল ইসলাম ইউসুফও যদি নির্বাচন করেন তাকেও কেউ ভোট দেবেন না। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন।’

নিয়াজ মোরশেদ এলিটের দাবি, তিনি ছাত্রাবস্থায় কমার্স কলেজে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আর সেজন্য গতবার আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটিতে সদস্য হয়েছিলেন। এবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হয়েছেন। তাহলে ওই মহল কেন সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন নিয়াজ মোরশেদ এলিট কোনকালে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করেননি। 

এখন প্রশ্ন, যদি নাই করেন তাহলে আগেরবার আওয়ামী লীগের উপ-কমিটিতে এবং এবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেন কিভাবে?

আমার জানা মতে, নিয়াজ মোরশেদ এলিট হঠাৎ রাস্তা থেকে উঠে আসা কোন ব্যক্তি নন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে তার বেশ নাম-ডাক কিংবা ভূমিকা রয়েছে। দেশের সব নিয়ম কানুন মেনে তিনি ব্যবসাও করেন।

আমি মনে করি, তার মতো মেধাবী যুবক যুবলীগ তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখবে। আমি এটাও মনে করি, তিনি আওয়ামী লীগের দুর্দিনে দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেবেন না। আর এমনটা যদিও হয়, সেদিন যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে এলিটকেও ছাড় দিয়ে কথা বলবো না।

লেখক : সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক

আকাশ ইকবাল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়