Cvoice24.com

ভ্যাকসিন যুগে সামিল হলো চট্টগ্রামও 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ভ্যাকসিন যুগে সামিল হলো চট্টগ্রামও 

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে ভ্যাকসিন

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণের বছর পার না হতেই সেই মহামারি থেকে মুক্তির দ্বার উন্মোচন হলো। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে করোনামুক্ত বিশ্ব গঠনের লড়াইয়ে সামিল হলো চট্টগ্রামও।

রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে ভ্যাকসিন নেন উপমন্ত্রী নওফেল।

এরপর একে একে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিদ্যুৎ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। করোনা পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের বুথের ভেতরে রাখা হয়েছে।

আজ রবিবার থেকে চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান করা হলেও পর্যায়ক্রমে নগরের ১৫ কেন্দ্রে শুরু হবে টিকাদান কার্যক্রম। ইতোমধ্যে এসব হাসপাতাল টিকা কার্যক্রমের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। প্রথম দিনে চমেক হাসপাতালে ১০০ ও জেনারেল হাসপাতালে ২০ জন মত টিকা নেবেন। তাদের প্রত্যেকেই তালিকাভুক্ত করোনার সম্মুখযোদ্ধা। এরপর নগরের ১৫ কেন্দ্রে প্রতিদিন অন্তত ৫শ জনকে ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া রবিবার সারাদেশের মত একযোগে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই সঙ্গে শুরু হয় টিকা কার্যক্রম। প্রতিটি হাসপাতালে গড়ে ২০ জন করে টিকা গ্রহণ করেন। প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বমোট ১৫টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে চলবে টিকাদান কার্যক্রম। এছাড়া ১৪ উপজেলায় সর্বমোট ২১৬টি কেন্দ্রে দেয়া হবে করোনার এ ভ্যাকসিন। নগরী ও উপজেলায় সর্বমোট ২৩১ কেন্দ্রে কার্যক্রম চলবে টিকাদানের।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো জটিলতা অনুভব করছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া বা কোনো সেনসেশন বা নেগেটিভ কোনোকিছু অনুভব করছি না। যে কোনো ধরনের ওষুধেরই কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। সুতরাং এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা যারা আজ ভ্যাকসিন নিয়েছি, আমরা এটা নিয়ে নেগেটিভ কিছু অনুভব করছি না।’

তিনি বলেন, ‌‘আপাতত অগ্রাধিকার তালিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিবন্ধন করা হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী, যাদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তি, স্বাস্থ্যখাতের লোকজন যারা সবচেয়ে বেশি মানুষের কাছে যান, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সবাই পাবেন এবং আশা করি সবাই ভ্যাকসিন নেবেন।’

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমরা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরের কথা, সামান্যতম কোনো অসুবিধাও অনুভব করছি না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আমরা আধঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। যেকোনো ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কিন্তু সাধারণ একটু জ্বর, মাথাব্যাথা হতেই পারে। কিন্তু এ ধরনের কিছুই হচ্ছে না। সুতরাং এটা আরও বেশি নিরাপদ। এরপরও ভ্যাকসিনেশন পরবর্তী জটিলতা পর্যবেক্ষণ এবং তারও পরবর্তী সকল ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার সকল উপজেলায় আমরা একসঙ্গে কার্যক্রম শুরু করেছি। আজ শুধুমাত্র চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। নগরে আমাদের ১৫টি কেন্দ্র আছে। প্রত্যেকটিতে ৬টি করে বুথ আছে। এখন ৫৫ বছরের যারা আছেন তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। পর্যায়ক্রমে সকলের কাছে পৌঁছানো হবে, তবে কেবলমাত্র ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী নারী ছাড়া।’

গত ২৭ জানুয়ারি প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ওই দিন ২৬ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী এ ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়