Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড

সার্জিস্কোপে ‘ভুল ইনজেকশন’ পুশে নারীর মৃত্যু

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:২৬, ১ মার্চ ২০২১
সার্জিস্কোপে ‘ভুল ইনজেকশন’ পুশে নারীর মৃত্যু

চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি হাসপাতাল সার্জিস্কোপ

নগরের বেসরকারি হাসপাতাল সার্জিস্কোপ ইউনিট-২ এ ওয়ার্ড বয়ের ‌‘ভুল ইনজেকশন’ পুশে রীনা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসক আসতে দেরি হওয়ায় সোমবার (১ মার্চ) সকালে হাসপাতালের ৫০৩ নম্বর কেবিনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান নিহতের ছেলে ইমতিয়াজ মাহমুদ।

নিহত রীনা বেগম চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর নয়াবাজার পদ্মা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুকের স্ত্রী।

কাতালগঞ্জস্থ সার্জিস্কোপ ইউনিট-২ হাসপাতালের পূর্বের দুর্নাম থাকলেও তারা গা-ছাড়া ভাব নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলেও জানান নিহতের স্বজনেরা।

নিহত রীনা বেগমের ছেলে ইমতিয়াজ মাহমুদ সিভয়েসকে বলেন, ‘আমার মায়ের পাকস্থলীর টিউমার ছিল। গত সাতদিন আগে ডা. এ আতা মোহাম্মদ মোজাচ্ছেমের নেতৃত্বে সার্জিস্কোপ হাসপাতালে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর আমার মা এখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।’ 

তিনি বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) রাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আতা মোহাম্মদ মোজাচ্ছেম দেখতে এসে আমার মা শঙ্কামুক্ত আছে বলে জানান তিনি। তিনি (চিকিৎসক) আরও জানান, আমার মাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো। মাকে বাসায় নিয়ে যেতে টাকা জোগাড় করি। তাছাড়া গত রাতে হঠাৎ ব্যাথা অনুভব করায় ব্যথার ইনজেকশনও দেওয়া হয়। প্রতিদিনের নিয়মে একটা নরমাল স্যালাইন চলতে থাকে।’

‘পরবর্তীতে আজ (সোমবার) সকালে স্যালাইন শেষ হয়ে গেলে একজন ওয়ার্ড বয় এসে ‘ডিপিএস স্যালাইন’ সরাসরি পুশ করে দেয় মায়ের শরীরে। ওয়ার্ড বয়ের দেয়া ইনজেকশনের বিষক্রিয়ায় শরীরে ছড়িয়ে পড়লে মা বড় বড় নিশ্বাস ফেলতে থাকে। তার কিছুক্ষণের মধ্যে শরীর নিস্তেজ হয়ে তিনি মারা যান। এ বিষয়টি বুজতে পেরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা এসে আমার মাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নিয়ে যান। সেখানে থেকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’

ইমতিয়াজ মাহমুদ সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বলেন, ‘টাকা জোগাড় করতে না পারায় মা হারালাম। যদিও ছাড়পত্র তৈরি ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করলেও এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। অন্য মায়ের সন্তানেরা যেন ভুল চিকিৎসায় মা না হারায়।’

সার্জিস্কোপ হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় রাশেদ ইনজেকশন পুশের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ইনজেকশন পুশ করার কিছুক্ষণের মধ্যে রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক চেকআপ করে রোগী মারা গেছে বলে জানান।’

হাসপাতালের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার নাথ বলেন, ‘কর্তব্যরত চিকিৎসক আসতে দেরি হচ্ছিল তাই ওয়ার্ড বয় ইনজেকশন দিতে গিয়েছিল। রোগী বাঁচাতে ইনজেকশন পুশ করতে গিয়ে, ঘটনা উল্টো ঘটে গেছে। গতকালকে রিলিজ নেওয়ার কথা থাকলেও, তারা টাকা জোগাড় করতে না পারায় রিলিজ নিতে পারেনি। এটি জেনে বুঝে করেনি। কেবিনে হওয়ার কারণে আমাদের এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’

সার্জিস্কোপ হাসপাতালের বোর্ড মেম্বরা ডা. এ আতা মোহাম্মদ মোজাচ্ছেম বলেন, ‘তিনি (রীনা বেগম) ক্যান্সারের রোগী ছিলেন, তাই মারা গেছেন। কি কারণে কি হয়েছে তা আগামীকাল জানাতে পারবো।’

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া সিভয়েসকে বলেন, ‘আমি এ ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয়। তবে এ বিষয়ে কোন মামলা বা অভিযোগ আসেনি। যদি এমন অভিযোগ আসে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

-সিভয়েস/আরএস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়