Cvoice24.com

জ্বর হলেই করোনার সাথে করতে হবে ডেঙ্গু পরীক্ষা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১২ জুলাই ২০২১
জ্বর হলেই করোনার সাথে করতে হবে ডেঙ্গু পরীক্ষা

রাত নেই দিন নেই। ঘরে কিংবা বাইরে। যেখানেই হোক মশার উৎপাতে থাকা দায়। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। করোনার ভয়াবহ মহামারীকালে নতুন করে আতঙ্ক ভর করছে ডেঙ্গু জ্বর। চট্টগ্রামে এ সময়ে কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে সেই হিসাব না থাকলেও করোনার মত না হলেও ডেঙ্গুতেও অনেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চলতি মাসে ডেঙ্গুতে একজন মারাও গেছে চট্টগ্রামে। 

এ অবস্থায় যেকোনো ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হলেই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষারও নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সোমবার (১২ জুলাই) অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর দেশে মশাবাহিত রোগটির প্রাদুর্ভাব বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় জ্বর নিয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে এলেই তাকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষাও করতে হবে। এ বিষয়ে দেশের সব সরকারি হাসপাতালের পরিচালক, সিভিল সার্জন, তত্ত্বাবধায়ক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু, দুটো পরীক্ষাই বিনামূল্যে করা হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষের কাছেও আমাদের নির্দেশনা হলো; জ্বর হলেই এই দুটো পরীক্ষা অবশ্যই করাবেন।’

অধিদফতরের এই মুখপাত্র বলেন, এডিসবাহী মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড় দেয়। সেজন্য দিনে ঘুমালেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। বর্তমানের অনেক কারণেই জ্বর হতে পারে। হতে পারে সেটি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বা ডেঙ্গু। তাই যদি জ্বর আসে কোন ধরণের অবহেলা করবেন না। ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য দেশের সব জেলা-উপজেলা হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর নির্দেশনার পাশাপাশি দেশের প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক এনএসওয়ান পরীক্ষার কিট সরবরাহ করা হয়েছে। একইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের জন্য দিনের বেলায় মশারি এবং চিকিৎসার জন্য সব প্রস্তুতি রাখার জন্যও বলা হয়েছে। যাতে কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার থেকে এডিসবাহী মশার মাধ্যমে যেন অন্য রোগীরা আক্রান্ত না হয়।

ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, যখনই নিকটস্থ হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করাবেন, তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসাও নেবেন। প্রয়োজনে আমাদের (স্বাস্থ্য অধিদফতরের) হটলাইনে যোগাযোগ করবেন। আপনার আমার প্রচেষ্টাই পারে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব রুখে দিতে।

এদিকে কীটতত্ববিদরা জানিয়েছেন, এক পশলা বৃষ্টি পড়ার পর ঘরে-বাইরের খোলা কন্টেইনারের (টব, বোতল, পানির ড্রাম, ডাবে খোসা) স্বচ্ছ পানিতে বিস্তার ছড়াচ্ছে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা। মশা মারতে কামান দাগার মত হলেও ওয়ার্ড ভিত্তিক টিম করে মশা মারার উদ্যোগ নিয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। 

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম নগরে জরিপ চালানো পর কীটতত্ববীদরা বলছেন, ‘মশা বিস্তারের বড় উৎস বদ্ধ ড্রেন ও নালা। কাজেই মশার বিস্তার ঠেকাতে ড্রেন ও নালাগুলোতে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে চারপাশ। মশক নিধনে সাধারণ মানুষকে সংযুক্ত করার দায়িত্ব নিতে হবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ (চসিক) সংশ্লিষ্টদের। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে খালগুলোর মুখ বন্ধ থাকা নিয়ে খোদ নানা অভিযোগ করে আসছেন মেয়রও।

চট্টগ্রাম শহরের বদ্ধ ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণেই ভয়ঙ্কর বিস্তার ছড়াচ্ছে মশা। কেননা নগরের চাক্তাই খালসহ অন্যান্য খাল এবং ড্রেনগুলো দীর্ঘদিন বদ্ধ অবস্থায় আছে। ফলে সেখানে জমে আছে দীর্ঘদিনের মশার ডিম ও লার্ভা। কিন্ত নগরের এসব ড্রেন এবং খালগুলো প্রবাহমান থাকলে মশার ডিম ও লার্ভাগুলো ধ্বংস হয়ে যেত।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়