Cvoice24.com

ওমিক্রন শনাক্ত হবে সিভাসুতে

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
ওমিক্রন শনাক্ত হবে সিভাসুতে

প্রতিকী ছবি।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) শনাক্ত করা যাবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ইতোমধ্যে অজ্ঞাত এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের জন্য কুরিয়া থেকে আনা হয়েছে একশ’ কিটও। যা সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছাবে।

সিভাসু কর্তৃপক্ষ জানায়, নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে আরটিপিসিআর ল্যাবেই মাত্র ৩ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ে জানা যাবে নতুন এ ভ্যারিয়েণ্টের খবর। কোরিয়ার এসডি বায়োনেন্সর নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একশ’ কিট সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা। এসব কিটের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ওমিক্রন শনাক্তের তথ্য জানা যাবে। যা পরবর্তীতে জিনোম সিকুয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, এসব কিটকে বলা হয় প্রাইমারি কিট। যা দিয়ে সন্দেহভাজন কোন রোগীর শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আছে কি-না তা জানা যাবে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে সোমবার এসব কিট বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো হবে। 

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগকে জানিয়েছি, তাদের বলেছি- যদি বিদেশ ফেরত যারা আসবে, সন্দেহ হলে তাদের নমুনা পাঠালে আমরা পরীক্ষা করব।

এদিকে রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অ্যাধাপক নাজমুল ইসলাম

বলেন, সংক্রমণের হার বাংলাদেশে এখনো দুই শতাংশের নিচে, এতে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। কারণ ঘরের দরজাতেই ওমিক্রন কড়া নাড়ছে। কাজেই আমরা যদি এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করতে পারি, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সঠিক উপায়ে নাক-মুখ ঢেকে আমরা যদি মাস্ক পরি, একইসঙ্গে টিকা কার্যক্রমকে যদি আমরা আরো বেগবান করতে সহায়তা করি, তাহলে সেটি ওমিক্রন হোক বা অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট হোক সেটিকে আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ওমিক্রন মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। তবে এক্ষেত্রে কমিউনিটিতে আমাদের সবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ জরুরি। একইসঙ্গে অন্যকে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করা ও সহায়তার মধ্য দিয়েই আমরা এই ভাইরাসটিকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব বলে মনে করি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে, সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি। আমরা যদি নিজেরা সচেতন হই, নিজেদেরকে মুক্ত রাখি, তাহলে আমাদের পরিবারও সুরক্ষিত থাকবে। এমনকি এটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুরো দেশকে সুরক্ষিত রাখবে। আমরা মনে করি রাজনীতিবিদ, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা, উন্নয়ন সহযোগীসহ প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধের কাজটি আমরা করতে পারব।

শুধু আফ্রিকান দেশগুলো থেকে যারা আসবে, তাদেরকেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করতে হবে, বাকি দেশগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর কী ভাবছে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই মুখপাত্র বলেন, আফ্রিকান দেশগুলোতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে বলেই তাদের জন্য বাড়তি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অন্য যেকোনো দেশেও যদি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়, তাহলে তাদের বেলায়ও আমরা একইরকম সিদ্ধান্ত নেব। কারণ হলো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন আর ইমপরট্যান্ট কেইস কিন্তু এক নয়। আফ্রিকায় যেটি হয়েছে সেটি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন, আর ইউরোপে যেটি হয়েছে সেটি ইমপরট্যান্ট কেইস।

তিনি আরও বলেন, ইউরোপের দিকেও আমরা গভীর মনোযোগ রেখেছি। সেখানে যদি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটে, তাহলে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের জীবন-জীবন জীবিকাকে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় জনস্বাস্থ্য এবং জনস্বার্থ রক্ষা করার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, তা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর কখনোই কুণ্ঠাবোধ করবে না।

সবশেষে নাজমুল ইসলাম বলেন, মাস্ক আমার সুরক্ষা সবার। আমরা সবাই যদি সুরক্ষিত থাকি, ওমিক্রনসহ যেকোনো বৃষ্টি আসুক না কেন, আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। সেই সঙ্গে আমাদেরকে টিকা গ্রহণের কাজটিকে আরো বেশি গতিশীল করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে নিজেদেরকে সুরকার দিকটিকে শতভাগ গুরুত্ব দিতে হবে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়