মণিপুরে ফের সহিংসতায় ২০০০ মানুষ ঘরছাড়া, আসামে উচ্চ সতর্কতা জারি
সিভয়েস২৪ ডেস্ক
এক বছরের বেশি সময় ধরে অশান্ত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুরে কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সহিংসতা দেখা দিয়েছে। এতে রাজ্যটির জিবিরাম জেলা থেকে প্রায় দুই হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। নিজেদের বাড়িঘর হারানো এসব মানুষের ঠাঁই হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসামের সাচার এলাকায়। এ অবস্থায় ওই জেলায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। গত ৬ জুন জিরিবামে সইবাম শরৎকুমার নামে ৫৯ বছরের এক চাষীর শিরশ্ছেদ করা মরদেহ উদ্ধার হয়। এই চাষী মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষ। মেইতেই জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, কুকিরা ওই চাষীকে হত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর নিজেদের সুরক্ষায় অস্ত্র ব্যবহারের অধিকারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে গ্রামবাসী।
চাষীর শিরশ্ছেদ করা মরদেহ উদ্ধারের পর কুকি অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রামে হামলার অভিযোগ ওঠে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে লোকজন এলাকা ছাড়তে শুরু করে। এ ঘটনায় অঞ্চলটিতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন।
আসামের বিধানসভার সদস্য কৌশিক রায় জানিয়েছেন, জিরিবাম জেলা থেকে সহস্রাধিক মানুষ সাচারে আশ্রয় নিয়েছে। এ সংখ্যা বাড়ছেই। তিনি জানান, আশ্রয়প্রার্থীদের বেশির ভাগই কুকি ও হমার জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। দুই সম্প্রদায়ই জো নৃগোষ্ঠীর অংশ। এর বাইরে মেইতেই জনগোষ্ঠীর কিছু লোকও আসামে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসামের নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি সেখানে বিশেষ কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের ৩ মে। কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত সংঘাতকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। একের পর এক হত্যাকাণ্ডের খবর সামনে আসে। ঘরছাড়া হয় অসংখ্য মানুষ। দুই নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।