শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য ভারত!

২০১৩ সালের বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য ভারত। ভারতীয় সাময়িকী ‘দ্যা ডিপ্লোম্যাট’ এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া প্রত্যর্পণ চুক্তিতে যেসব ধারা রয়েছে সেগুলো অনুযায়ী, শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দিতে হবে। তবে তারা চাইলে চুক্তির কিছু ধারা দেখিয়ে তাকে প্রত্যর্পণে অস্বীকৃতিও জানাতে পারে।

তবে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারত কয়েকটি কারণ দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে ফেরত নাও দিতে পারে। এতে করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার শঙ্কা থাকছে।

• কী আছে ২০১৩ সালের চুক্তিতে, ভারত কী হাসিনাকে ফেরতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে?

২০১৩ সালে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার প্রত্যর্পণ চুক্তি করে। এরপর ২০১৬ সালে এটি সংশোধন করা হয়। চুক্তিতে বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয় এবং এই অভিযোগে সর্বনিম্ন এক বছর বা তারও বেশি কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তাকে ফেরত দিতে হবে।

তবে এরমধ্যে আবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারাও রয়েছে। ৬ নম্বর ধারায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো দেশ মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে তাহলে তাকে প্রত্যর্পণে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। কিন্তু এই ধারাতেই আবার বিশেষভাবে উল্লেখ আছে— হত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও অপহরণের মতো অপরাধগুলো রাজনৈতিক অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। আর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলোর সবই হত্যা, অপহরণ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা হয়েছে।

দ্য ডিপ্লোম্যাট বলেছে, হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বিবেচনা করলে দেখা যাচ্ছে ধারা ৬ অনুযায়ী ভারত তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে না।

আরেকটি হলো ধারা ৮। এতে বলা আছে, যদি ‘অসৎ নিয়তে’ কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয় তাহলে তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। ভারত এই ধারাটি ব্যবহার করতে পারে। তারা দাবি করতে পারে হাসিনার বিরুদ্ধে সঠিক বিচার করার ‘সৎ নিয়তে’ মামলা করা হয়নি।

হাসিনা যেহেতু ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিলেন সে কারণে ভারত এই ধারা ব্যবহারে সমর্থন পেতে পারে। তবে বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত চাওয়ার পরও যদি ফেরত না দেওয়া হয় তাহলে এটি ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক খারাপ করবে।