Cvoice24.com

আজ বিশ্ব ডাক দিবস
হারিয়ে যাচ্ছে রামগড় ডাকঘরের প্রাণচাঞ্চল্য; নেই গণমানুষের পদচারণা

রামগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:২৬, ৯ অক্টোবর ২০২১
হারিয়ে যাচ্ছে রামগড় ডাকঘরের প্রাণচাঞ্চল্য; নেই গণমানুষের পদচারণা

আজ ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ডাক বিভাগ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। তবে তৎকালীন ১৯২০ সালের প্রাচীন মহকুমা শহর বর্তমানে খাগড়াছড়ি রামগড় উপজেলার সেই প্রধান ডাকঘরে নেই আগের মতো জৌলুস। সেই ‘ডাকঘর’ এখন কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে নেই গণমানুষের পদচারণা।

পাকিস্তান সরকারের আমলে গঠিত এই রামগড় ডাকঘরটির উপকেন্দ্র ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করে রামগড়কে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। সে সময় এই ডাকঘরেই অবস্থান নিয়েছিলেন ১ নম্বর সেক্টরের মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা। স্বাধীনতার পরে ১৯৮৪ সালের ৩০ মে রামগড় ডাকঘরটিকে ‘বি’ গ্রেডে উন্নীত করে প্রধান ডাকঘরের স্বীকৃতি দেয় ডাক বিভাগ। মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই জনপ্রিয় ডাক বিভাগ এখন প্রায় নির্জিব হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভ্যস্থ হয়ে পড়ায় মানুষ ডাক বিভাগকে ভুলে যাচ্ছে। ডাক বিভাগ বলে যে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ আছে তা অনেকের কাছে বেমালুম। অধিকাংশ মানুষের ধারণা, চিঠিপত্র বিলি করা ছাড়া ডাক বিভাগের আর কোন কাজ নেই। অনলাইন নির্ভর উন্নত যোগাযোগ ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় মোবাইলে এসএমএস ও ই-মেইল, ইন্টারনেটে, ই-কমার্স, কোরিয়ার সার্ভিসসহ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। তারই প্রভাবে সরকারী চিঠিপত্র ছাড়া ডাকঘর কেন্দ্রিক জনসাধারণের কর্মতৎপরতা না থাকায় ঐতিহ্যবাহী রামগড় প্রধান ডাকঘরটি হারাতে বসছে তার পুরোনো জৌলুস। 

জানা গেছে, রামগড় ডাক বিভাগে টেজারী কার্যক্রম ও বাংলালিংক নেটওয়ার্কে ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার (ইএমইএস) সার্ভিসটি বাংলালিংক নেটওয়ার্ক চালু হলেও সেবা প্রধানে মোবাইল ও যান্ত্রিক অপর্যাপ্ততায় এ সেবা চালু করা যাচ্ছে না। যার কারণে টেজারী ও ইএমইএস সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার মানুষ। কার্যক্রমটি চালু করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরোনো এ পোস্ট অফিস থেকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩শতাধিক গ্রাহককে সুবিধা দেয়া সম্ভব। সেবাটি চালু করা হলে ডাক বিভাগ কেন্দ্রিক মানুষের কর্মতৎপরতা বাড়ার পাশাপাশি এ বিভাগ থেকে সরকার পাবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। 

রামগড় ডাক অফিস সূত্রে জানা গেছে, রামগড় ডাকঘরের অধিনে রামগড় ছাড়াও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি ও লক্ষিছড়ি উপজেলা ডাক বিভাগ রামগড় প্রধান ডাকঘরের অধিনে পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া রামগড় ডাকঘরের আওতাধীন চার উপজেলায় আরও ১২টি উপ-শাখা চালু রয়েছে। রামগড় ডাকঘরে ২১ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১২ জন ও শূন্য পদের সংখ্যা ৯টি।

রামগড় প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার অজন্তা মুরশদী বলেন, ‘সম্প্রতী কেন্দ্রীয় ডাকঘর উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক ডাক বিভাগকে অনলাইনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন ও জনসম্প্রীক্ততার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডাক বিভাগ। আর এ কাজ করতে পারলে ডাক বিভাগ মানুষের কাছে আবারো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং তার হৃত গৌরব ফিরে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী রামগড় ডাকঘরটিও সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। তখন এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ আবারো ডাক বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়