Cvoice24.com

রামগড়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা— দাবি শিক্ষকের পরিবারের

রামগড় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৫৫, ২২ মে ২০২২
রামগড়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা— দাবি শিক্ষকের পরিবারের

রামগড় লেকভিউ রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার

খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো নাটক বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার।

রোববার (২২ মে) রামগড় লেকভিউ রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার দাবি করে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তার সহযোগী রুপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে এ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক নাটক মঞ্চস্থ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর সঙ্গে তার স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। ২০১৯ সালে ইন্দ্রানী দেবী ভূগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালীন বেলায়েত হোসেনের ভাগিনা মোহাম্মদ তারেককে হাত বেঁধে বেদম প্রহার করে। তখন বেলায়েত হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমূলকভাবে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এ ঘটনার জন্য ইন্দ্রানী দেবী সবসময় বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করে আসতো। 

ঘটনার কিছুদিন পর ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় তার স্বামী এবং প্রধান শিক্ষকের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়গুলো তার স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অনেকজনকে অতিবাহিত করেন এবং সমস্যায় পড়তে পারেন বলে বিভিন্ন জায়গায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, রুপম ত্রিপুরা নামের স্থানীয় এক বখাটে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর প্রভাব খাঁটিয়ে সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২ জন নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতো এবং তাদের মোবাইল চার্জ দিতো। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রুপম ত্রিপুরার মাঝে তুমূল বাগবিতণ্ডা হয়। রুপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দেন। তার কিছুদিন পর রুপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানায়। এতে রুপম ত্রিপুরা তার উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা দাবি করে বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক উপজাতি মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং রুপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও দাবি করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা ফুলবানু ত্রিপুরা অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি পরিস্থিতির স্বীকার। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা না করলে রুপম ত্রিপুরা তাদের পরিবারকে সমাজচ্যুত করবেন। এ ভয়ে তিনি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তার দুই কন্যা।

থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমীনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাকে জানায়নি। ঘটনাটি তার কাছে মিথ্যা এবং সাজানো নাটক মনে হয়েছে। 

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ১১ মে ঘটনায় পরের দিন শুক্রবার ১২ মে শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্বে রামগড় থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর মা ফুলবানু ত্রিপুরা। এ ঘটনায় শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় জেলা শিক্ষা অফিস। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

.রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

.রামগড়ে ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি: শিক্ষক বরখাস্ত, গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়