Cvoice24.com

খাগড়াছড়ির বারৈয়ারহাট-রামগড় সড়ক প্রশস্ত কাজের উদ্বোধন

রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:০২, ২৪ মে ২০২৩
খাগড়াছড়ির বারৈয়ারহাট-রামগড় সড়ক প্রশস্ত কাজের উদ্বোধন

খাগড়াছড়ির বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।

বুধবার (২৪ মে) সকাল ১১টার সময় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে সড়ক ও জনপদ বিভাগের বাস্তবায়নে ঢাকার তেজগাঁও সড়ক ভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রশস্ত কাজের উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তার বক্তব্যে অবকাঠামো নির্মাণে ভারত ও বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রতি সকল ক্ষেত্রেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

বাংলাদেশ মূল্যমান ও প্রকল্পের সংখ্যা উভয় দিক থেকেই ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার, যাকে রেয়াতি অর্থায়নের আওতায় প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যমানের চুক্তি হয়েছে এবং প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ ২০২২ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।

তিনি প্রশংসা করে বলেন, অতিমারির সবচেয়ে সংকটপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে ভারত দ্রুততম ও বৃহত্তম প্রদানকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই প্রকল্পটি প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ স্থাপনসহ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে। সাব্রুম (ত্রিপুরা) রামগড় (খাগড়াছড়ি) স্থল বন্দর উভয় দেশের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে বিশাল সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে। রামগড় স্থলবন্দরটি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর হতে মাত্র ১০৮ কিলোমিটার ও রাজধানী ঢাকা হতে ২০৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত; সুতরাং এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও ঢাকার সঙ্গে সাক্রম (ত্রিপুরা) রামগড় স্থলবন্দরের সংযোগ স্থাপন হবে এবং এর মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক সমৃদ্ধি বেগবান হবে। খাগড়াছড়ির তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশে এই সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনসহ পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগসহ সারাদেশের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।

এসময় রামগড় স্থলবন্দর স্থলে স্থাপিত ভিডিও কনফারেন্সের স্থলে প্রকল্পের ভিক্তিপ্রস্থর স্থাপন কাজের উদ্বোধনে অংশ নেন শরণার্থীবিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক শহিদুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার নাইমুল হক, রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তৈয়ব, রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন, পৌর মেয়র রফিকুল আলমসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা এবং সরকার দলীয় নেতাকর্মী।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের মিরসরাই-ফটিকছড়ি ও খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কি.মি। বর্তমান ৫.৫০ মিটারের সড়কটি বৃদ্ধি করে ১১.৩০ মিটারে উন্নতি করা হবে। এতে থাকবে ২৪৯.২০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৯টি ব্রিজ ও ১০৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ২৩টি সেতু। ২৪টি ব্রিজ ও ২৪টি সেতু ইতোপূর্বে জাইকা কর্তৃক নির্মিত হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ১১০৭.১২ কোটি টাকা যার মধ্যে ইন্ডিয়ান স্টেট ক্রেডিটের আওতায় অর্থাৎ ভারত সরকার ঋণ হিসাবে দিচ্ছে ৫৯৪.০৭ কোটি টাকা। আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে কাজটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অশোকা বিল্ডকন লিমিটেডকে সড়কটি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়