নেত্রকোনার যুবক অপহরণ দীঘিনালায়, গ্রেপ্তার ১
দীঘিনালা প্রতিনিধি, সিভয়েস২৪
খাগড়াছড়ি দীঘিনালায় ‘ধর্মের ভাই’ ডেকে নেত্রকোনার এক যুবককে অপহরণ করা হয়েছে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক অপহরণকারীকে। ঘটনাটি ঘটেছে দীঘিনালা বোয়ালখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কাঁঠালতলী (চিটিং টিলা) এলাকায়।
পুলিশ জানায়, নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার উজানগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান চট্টগ্রামের নাজিরহাট ফটিকছড়ি ভান্ডারশরীফ এলাকায় এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে কৃষিশ্রমিকের কাজ করেন। তার চাচাতো ভাই মো. ফারুক দীঘিনালায় বালি শ্রমিকের কাজ করেন। তার বাসায় বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে দীঘিনালায় আসেন। এ সময় ফারুকের মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় কয়েকজনের কাছে ঠিকানা খুঁজতে থাকেন।
পুলিশ আরও জানায়, এর মধ্যে সহিদুল হোসেন (৪০) নামে একজনের সাথে মিজানুরের পরিচয় হয় এবংতিনি মিজানুর রহমানকে ধর্মের ভাই ডেকে তার বাসায় থাকতে বলেন। মিজানুর রহমানও তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাসায় যায়। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে তার সাথে ঘরের এক কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন মিজানুর। পরদিন সকাল ৭ টার দিকে চট্টগ্রামে চলে যেতে চাইলে সহিদুলসহ আরো ৫ জন মিলে তাকে মারধর করে। এবং মিজানুরের মা ও স্ত্রীর ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
‘গোপন সংবাদে খবর পেয়ে বোয়ালখালী ইউপিস্থ পশ্চিম কাঠালতলী এলাকার সুফিয়া বেগমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে দীঘিনালা থানা পুলিশ। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও মো. রফিক (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।’
অপহৃত মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামের নাজিরহাট ফটিকছড়ি ভান্ডারশরীফ এলাকায় এক মেম্বারের বাড়িতে কৃষি কাজ করি। দীঘিনালায় বাসা ভাড়ায় থেকে বালিকাটার লেবারি কাজ করেন আমার চাচাতো ভাই মো. নাজিম ফারুক। বেড়ানোর উদ্দেশ্যে মোবাইলে তার সাথে যোগাযোগ করে দীঘিনালায় বাস টার্মিনালে আসি। এসে চাচাতো ভাইকে মোবাইলে কল দিলে বন্ধ পাই। বন্ধ পেয়ে ভাবছি আবার নাজিরহাট ফিরে যাব ‘
তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে আমাকে দেখে একলোক বলে কোথায় যাবেন। আমি বলি চাচাতো ভাইয়ের কাছে আসছিলাম তার মোবাইল বন্ধ। তাই ফিরে চলে যাব। লোকটি আমাকে তার বাড়ি ময়মসিংহের বলে পরিচয় দিয়ে দেশি বলে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। রাতে খাওয়ার পড়ে ঘুমিয়ে পরি।’
মিজানুর বলেন, ‘সকাল ৬ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দোকানে চা-নাস্তা করতেও নিয়ে আসে। কিন্তু এর পরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আমার হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আমার বাপ-মা স্ত্রীর কাছে মোবাইল করতে বলে। পরে আমার বাবা-মা, স্ত্রীর সাথে বলে অপহরণকারীরা ৪ লাখ টাকায় রাজি হয়। এর মধ্যে এক মহিলা আমাকে ভাত দিতে আসলে তাকে বোন ডাকি। বলি আমাকে বাঁচান, থানায় ফোন দেন। এরপরে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।’
দীঘিনালা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহৃত ব্যক্তিকে দ্রুত উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপহৃত মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৪-৫ জন অজ্ঞাতনামা রেখে অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।