Cvoice24.com

বাউল সম্রাটকে হারানোর এক যুগ

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
বাউল সম্রাটকে হারানোর এক যুগ

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের প্রয়াণের এক যুগ পূর্ণ হলো রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর)। ২০০৯ সালের এই দিনে মারা যান বাংলার এই বাউল সম্রাট। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে দেহ ত্যাগ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম, কিন্তু রেখে গিয়েছেন নিজের অসংখ্য সৃষ্টি।

সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার ও কুসংস্কার দূর করতে সুরে সুরে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত সংগ্রাম করে গিয়েছেন বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম। তার গানে রয়েছে আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া, যা মুহূর্তেই যে কাউকে মোহাবিষ্ট করতে পারে।

মৃত্যুর আগে তিনি রেখে গেছেন এক সৃষ্টিশীল ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন। যার মাধ্যমে সব সময়ই তাকে স্মরণ করেন ভক্ত অনুরাগী থেকে একেবারে বাউল গানের সাধারণ শ্রোতা দর্শকরাও।

শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠেন শাহ আব্দুল করিম। তার পিতার নাম ইব্রাহীম আলী ও মাতার নাম নাইওরজান। দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সংগীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল সম্রাটের প্রেরণা তার স্ত্রী আফতাবুন্নেসা; যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন।

ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়,অবিচার,কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহ এর দর্শন থেকে।

আব্দুল করিম প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।

বাউল সাধক শাহ আবদুল জীবনের একটি বড় অংশ লড়াই করেছেন দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে সাউন্ড মেশিন নামের একটি অডিও প্রকাশনা সংস্থা তার সম্মানে জীবন্ত কিংবদন্তী: বাউল শাহ আবদুল করিম নামে বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া তার জনপ্রিয় ১২ টি গানের একটি অ্যালবাম প্রকাশ করে। শিল্পীর চাওয়া অনুযায়ী ২০০৯ সালের প্রথম দিকে সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের উদ্যোগে বাউল আব্দুল করিমের সমগ্র সৃষ্টিকর্ম নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়