শিল্পকলায় দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী
‘নদীমাতৃক বাংলাদেশে বড় বিপদে নদী’
সিভয়েস২৪ ডেস্ক
আকাশের কালো মেঘ, আরও নিকষ হয় কালো ধোয়ায়। চারপাশে ঘোর অন্ধকারই যেনো নেমে আসে। প্রাণ ও প্রকৃতিকে নিয়ে মানুষের যথেচ্ছ ব্যবহার সর্বনাশ করে চলেছে বাংলাদেশের। যার অন্যতম শিকার নদী। নদীমাতৃক বাংলাদেশে বড় বিপদেই আছে নদীগুলো। নদী আর তাঁর প্রাণ প্রকৃতির দূষণের গল্প নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন গ্যালারিতে আয়োজন করা হয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। রাত আটটা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী।
দেশের ৯৬ আলোকচিত্রী ক্যামেরার চোখে চোখ রেখে দর্শকরা দেখেছে দখল, দূষণে বিপন্ন নদী। নদী পাড়ে কলকারখানার বর্জ্যে গলাটিপে ধরা নদীর জীবন। কালো ধোয়ায় আছন্ন নদীর আকাশ ঢেকে যাওয়া। আবারও কোথাও সুন্দরের প্রসারিত দুহাতে নদী অনন্যরূপে সাজিয়েছে এই বদ্বীপভূমিকে। শীতের সকালে স্নিগ্ধ নদীর জলে কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে জীবিকার জন্য চলমান জীবনও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
সাত বছরের সন্তান অপরাজিতাকে নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন বিমলেন্দু দাশ। তিনি বলেন, ‘নদী সম্পর্কে সন্তানকে জানাতে চাই। নৌকা, জাহাজ ইত্যাদির বাইরেও নদীকে ঘিরে কতো কিছু থাকে, সেটাও দেখেছি প্রদর্শনীতে।’
শিল্পকলা একাডেমিতে চিত্রাঙ্কন শেখার ফাঁকে প্রদর্শনী দেখতে এসেছিল অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোস্তাইন হোসেন। তিনি জানান, নদীর ছবি দেখে ভাল লেগেছে। নদী দূষণ দেখে খারাপও লেগেছে। এই পরিস্থিতি থেকে নদীকে বাঁচাতে হবে।
নদী ও তাঁর পাড়ের মানুষের জীবন নিয়ে এই প্রদর্শনী আয়োজন করেছে ডেল্টা রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ। সহযোগিতায় রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি ও নেদারল্যান্ড দূতাবাস।
ডেল্টা রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের গবেষক মো. সাকিবুল হক সাকি জানান, নদীর জীবন ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি স্থানীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য এই আয়োজন। প্রান্তিক নদীগুলোকে মানুষের সামনে নিয়ে আসার প্রচেষ্টাও রয়েছে। সাধারণত নদীর ছবি প্রদর্শনীতে পদ্মা, মেঘনার মতো বড় নদীগুলোকেই দেখা যায়। তবে এই প্রদর্শনীতে হরিপুর নদী, যাদুকাটা নদীর মতো আপাত অপরিচিত নদীগুলোকেও দেখানো হয়েছে লেন্সের ভেতরে।
ইতোমধ্যে এই প্রদর্শনীর দুটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে খুলনা ও রাজশাহীতে।