Cvoice24.com

সেই জাহেদ চেয়ারম্যানের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ৭ মে ২০১৮
সেই জাহেদ চেয়ারম্যানের কারাদণ্ড

ছবি : সিভয়েস

মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকসা চালাতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র লুট, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নাজেহাল, বন বিট কর্মকর্তাকে মারধর ও কারণে-অকারণে মানুষের সাথে দুর্ব্যবহারসহ বিভিন্ন ঘটনায় সমালোচিত মিরসরাইয়ের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সদস্য।

গত বছরের ১৫ জুলাই বিকাল থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ওই দিন বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (ঢাকামুখী অংশ) অবরোধ করে রাখে সিএনজি অটোরিকসা চালকরা। অবরোধ সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ চালকদের উপর লাঠিচার্জ করলে বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় দফায় দফায় উভয় পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ চলতে থাকে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসময় পুলিশ ৩ রাউন্ড গুলি চালায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়া আহমেদ সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক ও ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের সাথে কথা বলে সন্ধ্যা ৭টায় মহাসড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে দেয়। তবে পুলিশের একটি রাইফেল লুণ্ঠিত হওয়ায় রাত ১০টার সময় বড়তাকিয়া বাজারে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এই ঘটনার আগের দিন ১৪ জুলাই মিঠাছরা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় চেয়ারম্যান জাহেদ অতিথির আসনে ১ম কাতারে বসতে না পারার জের ধরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রহমান চৌধুরীকে প্রকাশ্যে নাজেহাল করে। এমনকি গোলাম রহমান চৌধুরীকে মারতে উদ্যত হয়। এসময় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ তাকে থামিয়ে দেয়। এই ঘটনায় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও শিক্ষকসহ সকলেই হতবাক হয়ে যায়। একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হয়ে কোন কারণ ছাড়াই উপজেলা পর্যায়ের একজন সরকারী কর্মকর্তাকে এভাবে নাজেহাল করায় জাহেদ ইকবালের খুঁটির জোর কোথায় এই নিয়ে প্রশ্ন ছিলো সবার মুখে মুখে। তার এমন নেতিবাচক কর্মকান্ডে বিব্রত খোদ দলীয় নেতাকর্মীরা।

চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে এমন অনেক ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরী। বন বিট কর্মকর্তা আশিককে মারধর করে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন তিনি। তবে বন বিট কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় আদালত জাহেদ ইকবাল চৌধুরীকে খালাস প্রদান করেন।

বিভিন্ন ঘটনার বিচারে চেয়ারম্যান জাহেদ পার পেলেও দ্রুত বিচার আইনে গত বছরের জুলাই মাসে করা মামলায় তাকে অবশেষে কারাদণ্ড ভোগ করতে হলো। এছাড়াও একই মামলায় তার ভাইসহ অন্য একজনকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ১২ নং খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরী ও তার ভাই আসিক ইকবাল চৌধুরী, এবং একই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সুমন। সোমবার (৭ মে) অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৫ জুলাই চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল চৌধুরীসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও ১৬৫জনকে অজ্ঞাত করে আইনশৃংখলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২ (সংশোধনী) ২০০৪ এর ৪ ও ৫ ধারায় একটি মামলা করেন (মামলা নং-১৪/১৭) জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. জাকির হোসেন।
 
মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২ আগষ্ট আদালতে চার্জশীট দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহির উদ্দিন। আদালত একই বছরের ৩ নভেম্বর চার্জ গঠন করেন। মোট ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে পুলিশসহ ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেননি। 

সিভয়েস/এইচআর/এমইউ

182

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়