Cvoice24.com

সন্ধান মেলেনি হাজতি রুবেলের, থানায় মামলা জেলারের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০৪, ৬ মার্চ ২০২১
সন্ধান মেলেনি হাজতি রুবেলের, থানায় মামলা জেলারের

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার।

চট্টগ্রাম কারাগারে তালাবদ্ধ রুম থেকে উধাও হওয়া হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেলকে কারাগারের সর্বত্র তন্নতন্ন করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারাগারের অভ্যন্তরে আগেও দুইবার ড্রেনে ও ছাদে লুকিয়ে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে হত্যা মামলায় কারাবন্দি এ হাজতির। শনিবার ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি বের হয়ে যান। পরে ৬টার পর রোলকল দিতে আসলে তখন থেকে তার হদিস পাচ্ছিল না কারা কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, কারাগারের ড্রেন দিয়েই পালিয়ে গেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার হদিস না মেলায় জিডির পর এবার থানায় মামলা দায়ের করেছে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। 

শনিবার (৬ মার্চ) রাত দশটার পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালী থানার মামলা নম্বর ২৩/২১। ধারা-দণ্ডবিধির ২২৪। 

এজহারে তিনি উল্লেখ করেন, ‘শনিবার (৬ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে তালামুক্ত করার পর ফরহাদ হোসেন ওরফে রুবেল নামে এক হাজতিকে পাওয়া যাচ্ছে না। যার হাজতি নম্বর ২৫৪৭/২১। তিনি গত ৯ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসেন। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায়। আগের দিন শুক্রবার রাতে সবার সাথে রুবেলও কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকলেও ভোর সাড়ে ৬টার পর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। পরে দায়িত্বরত কারারক্ষী ও হাজতিদের কাছ থেকে জানতে পারেন, হাজতি রুবেল শনিবার ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যান। পরবর্তীতে পুরো কারাগারে তল্লাশি করেও তার হদিস মেলেনি।’

কারা সূত্র জানায়, এরআগেও তিনি ২০১৮ সালে দুইবার কারা অভ্যন্তরে লুকিয়ে ছিলেন। এবার নতুন করে গত ৯ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলায় জেলে গিয়ে আবার লুকিয়ে গেলেন। এরআগে ২০১৮ সালে নরসিংদীর রায়পুরার ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগারে গেলে সেই সময় দুইবার কারাগারের ড্রেনে ও ছাদে আত্মগোপন করেন। সেই সময় ব্যাপক খোঁজাখুজির পর দুই বারই তাকে উদ্ধার করে কারা কর্তৃপক্ষ। এবারও তিনি সেই কাজ করেছেন। 

রুবেলের উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান কোতোয়ালী থানায় করা জিডি করেছিলেন। জিডি নম্বর-৪১৭)। 

কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেও তালাবদ্ধ একটা ভবন থেকে একজন হাজতির হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে কারা অভ্যন্তরে। কারা অভ্যন্তরেই ওই হাজতি লুকিয়ে থাকতে পারে ধারণা করে সেখানে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাজানো হচ্ছে পাগলা ঘণ্টা এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশও কারাগারে প্রবেশ করানোর পরও হাজতি রুবেলকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে তাকে পলাতক ধরেই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। 

কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দীন চট্টগ্রাম কারাগারের জেলারের মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান ও জেলার মো. রফিকুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন না ধরায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

রুবেল সদরঘাট থানার এসআরবি রেল গেইট এলাকায় ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে বুকে ছুরিকাঘাত করেন। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কালাম হাসপাতালে মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হত্যার অভিযোগে ডবলমিুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে ফরহাদ হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। ওই মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে যান রুবেল। 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়