হাজতি উধাও : জেলারকে প্রত্যাহার, ঘটনা তদন্তে কমিটি
সিভয়েস প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হত্যা মামলায় কারাবন্দি হাজতি উধাও হওয়ার ঘটনায় জেলার রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যিনি ঘটনার দিনই এ ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। এছাড়া ডেপুটি জেলার আবু সাদাত ও দুই কারারক্ষীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে ডিআইজি প্রিজন্স (চট্টগ্রাম ও সিলেট) এ কে এম ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে হাজতি উধাওয়ের ঘটনায় খুলনা বিভাগীয় ডিআইজি প্রিজন্স ছগীর মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে কারা সদর দপ্তর। কমিটিতে অন্য দুই সদস্য হলেন—ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ।
অন্যদিকে এ ঘটনায় কারা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমনি আক্তারকে আহ্বায়ক এবং এডিসি (ট্রাফিক-উত্তর)মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো.মাজহারুল ইসলামকে সদস্য করা হয়।
ডিআইজি প্রিজন্স ফজলুল হক জানান, কর্ণফুলী ভবনের ১৫ নম্বর সেলের দায়িত্বরত কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কারারক্ষী ইউনুস মিয়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সহকারী প্রধান কারারক্ষী কামাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
শনিবার ভোর থেকে হাজতি রুবেলের সন্ধান না মেলায় দিনভর তল্লাশি করে সন্ধ্যায় জিডির পর রাতে মামলা করেন প্রত্যাহার হওয়া জেলার রফিকুল ইসলাম। কোতোয়ালী থানার মামলা নম্বর ২৩/২১। ধারা-দণ্ডবিধির ২২৪।
এজহারে তিনি উল্লেখ করেন, ‘শনিবার (৬ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে তালামুক্ত করার পর ফরহাদ হোসেন ওরফে রুবেল নামে এক হাজতিকে পাওয়া যাচ্ছে না। যার হাজতি নম্বর ২৫৪৭/২১। তিনি গত ৯ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসেন। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায়। আগের দিন শুক্রবার রাতে সবার সাথে রুবেলও কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকলেও ভোর সাড়ে ৬টার পর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। পরে দায়িত্বরত কারারক্ষী ও হাজতিদের কাছ থেকে জানতে পারেন, হাজতি রুবেল শনিবার ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যান। পরবর্তীতে পুরো কারাগারে তল্লাশি করেও তার হদিস মেলেনি।’
রুবেল সদরঘাট থানার এসআরবি রেল গেইট এলাকায় ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে বুকে ছুরিকাঘাত করেন। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কালাম হাসপাতালে মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হত্যার অভিযোগে ডবলমিুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে ফরহাদ হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। ওই মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে যান রুবেল।