Cvoice24.com

উধাও হাজতির খোঁজ মেলেনি কারাগারের ড্রেনেও

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৮ মার্চ ২০২১
উধাও হাজতির খোঁজ মেলেনি কারাগারের ড্রেনেও

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিখোঁজ হাজতির খোঁজে ফায়ার সার্ভিস।

কিছুতেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে উধাও হয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেলকে। কারা কর্তৃপক্ষের ধারণা কারাগারে ভেতর থাকা ড্রেন, সেপটিক ট্যাংক কিংবা ভবনের কার্ণিশে লুকিয়ে থাকতে পারে হাজতি রুবেল! তাই কারাগারের ভেতরে ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকগুলোতে রুবেলকে খোঁজছে ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্সের চৌকস দু’টি দল। তবে কোথাও তার হদিস মেলেনি। 

সোমবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা ড্রেনগুলোতে তল্লাশি শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি একটি দল। দুপুর পর্যন্ত ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকগুলোতে হাজতি রুবেলের খোঁজ না পাওয়ার কারণে সেখানে যুক্ত হয়েছে আরও একটি সার্চ এণ্ড রেসকিউ টিম।

ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, কারাগারের ভেতরে থাকা ড্রেন ও সেপটিক ট্যাংকে কাজ করছে ৩ সদস্যের একটি ডুবুরি দল। অন্যদিকে রেসকিউ টিমে রয়েছে ১১ জন সদস্য। সব মিলিয়ে দু’টি দলে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৪ জন সদস্য কাজ করছে। কিন্তু এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়া হাজতি রুবেলের সন্ধান পায়নি তারা।

আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কফিল উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম কারাগার থেকে এক হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় অভিযান চালাচ্ছে দু’টি দল। এ দু’টি দল গঠন করা হয়েছে নন্দনকানন এবং আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের সমন্বয়ে। কারা কর্তৃপক্ষ যেভাবে চাইবে সেভাবেই সহযোগিতা করবে ফায়ার সার্ভিস।

এদিকে সোমবার (৮ মার্চ) সকালে প্রথমে কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) ছগির মিয়াসহ তিন সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক এ কে এম ফজলুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তারা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কারাগারের সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজার পরও নিখোঁজ হাজতিকে পাওয়া যায়নি। তাই ওই দিনের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তা যাচাই করা হচ্ছে।’ 

শনিবার ভোর থেকে হাজতি রুবেলের সন্ধান না মেলায় দিনভর তল্লাশি করে সন্ধ্যায় জিডির পর রাতে মামলা করেন প্রত্যাহার হওয়া জেলার রফিকুল ইসলাম। কোতোয়ালী থানার মামলা নম্বর ২৩/২১। ধারা-দণ্ডবিধির ২২৪। কর্ণফুলী ভবনের ১৫ নম্বর সেলের দায়িত্বরত কারারক্ষী নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কারারক্ষী ইউনুস মিয়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সহকারী প্রধান কারারক্ষী কামাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। জেলার রফিকুল ইসলাম ও ডেপুটি জেলার আবু সাদাতকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এজহারে তিনি উল্লেখ করেন, ‘শনিবার (৬ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে তালামুক্ত করার পর ফরহাদ হোসেন ওরফে রুবেল নামে এক হাজতিকে পাওয়া যাচ্ছে না। যার হাজতি নম্বর ২৫৪৭/২১। তিনি গত ৯ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসেন। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায়। আগের দিন শুক্রবার রাতে সবার সাথে রুবেলও কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের ৫ম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকলেও ভোর সাড়ে ৬টার পর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। পরে দায়িত্বরত কারারক্ষী ও হাজতিদের কাছ থেকে জানতে পারেন, হাজতি রুবেল শনিবার ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যান। পরবর্তীতে পুরো কারাগারে তল্লাশি করেও তার হদিস মেলেনি।’

রুবেল সদরঘাট থানার এসআরবি রেল গেট এলাকায় ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে বুকে ছুরিকাঘাত করেন। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কালাম হাসপাতালে মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হত্যার অভিযোগে ডবলমিুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে ফরহাদ হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। ওই মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে যান রুবেল।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়