Cvoice24.com

সড়কে ফের বাকবিতণ্ডায় যাত্রী-চালক

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ৭ এপ্রিল ২০২১
সড়কে ফের বাকবিতণ্ডায় যাত্রী-চালক

ছবি: সিভয়েস

লকডাউনের দুই দিন পর চট্টগ্রামসহ দেশে সব সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এখনো আছে সরকারের নানা বিধি-নিষেধ। মানতে হচ্ছে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত, সাথে ৬০ শতাংশ ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিও কার্যকর আছে।

যদিও নগরে চলাচল করা গণপরিবহনগুলোতে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এছাড়া বেশির ভাগ চালক-হেলপারের মুখে দেখা যায়নি মাস্ক। এতে করে যাত্রী-চালকের বাকবিতণ্ডার চিত্র ফের ফিরে এসেছে সড়কে।

বুধবার (৭ এপ্রিল) নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সকাল থেকেই চলাচল শুরু করে বাস, মিনিবাস, টিকটিকিসহ বিভিন্ন গণপরিবহন। আগের নিয়মে ৬০ শতাংশ ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও দ্ধিগুণ ভাড়া আদায় করতে দেখা যায় বেশির ভাগ গণপরিবহনে। এতে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে যাত্রী-চালকরা। 

যাত্রীদের অভিযোগ— হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক ব্যবহারের কথা থাকলেও সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। আবার কেউ কেউ নামে মাত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দায় সারছেন।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন সিভয়েসকে বলেন, ‘দু’দিন ধরে বেশি কষ্ট হয়েছিল। কিছু পথ রিকশায় আবার কিছু পথ পায়ে হেঁটে অফিসে গিয়েছি। তবে আজকে সেই অস্বস্তি নেই।’ 

ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ আগের দিনের মতো কষ্ট না হলেও ভাড়া নিচ্ছে ডাবল। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে যাত্রী নিচ্ছে। এমনকি দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের কাছ থেকেও দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে।’  

বুধবার দুপুর ২টার দিকে টাইগার পাস থেকে ছেড়ে আসা একটি মিনিবাসে দেখা যায়, সামাজিক দূরুত্ববিধি মেনে প্রতি দুই সিটে একজন যাত্রী বসানো হয়েছে। তবে দাঁড়িয়েও কিছু সংখ্যক যাত্রী তুলেছে বাসটি।

বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করে আগ্রাবাদের বাসিন্দা শিমুল হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় বাস চলাচল শুরু করায় ভোগান্তি কিছুটা কমেছে। কিন্তু ভাড়া নিয়ে আমরা সাধারণ যাত্রীরা রীতিমত বিপত্তিতে পড়ছি। ভাড়া বাড়ানোর কথা ছিল ৬০ শতাংশ। অথচ তারা আমাদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই করছে খারাপ আচরণ। আগে চকবাজার থেকে রাস্তার মাথায় ভাড়া ছিল ৮ টাকা, এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা।’

একইভাবে কাজির দেউড়ি থেকে চকবাজারের ভাড়া ৫ টাকার জায়গায় আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা। অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত বাস বা টেম্পোর ভাড়া ছিল ৭ টাকা। সেখানে এখন আদায় করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা। মুরাদপুর থেকে কাজির দেউড়ি পর্যন্ত হিউম্যান হলারে ভাড়া ছিল ৬ টাকা। এখন বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। 

এদিকে ভাটিয়ারি থেকে যেসব গণপরিবহণ শহরে ঢুকছে সেখানেও দেখা গেল একই চিত্র। ওই রুটের যাত্রী ইদ্রিস মিয়া সিভয়েসকে বলেন, ‘গণপরিবহণ সংশ্লিষ্টরা বর্তমানে পকেট কাটার মহোৎসবে মেতে উঠেছে। তাদের মধ্যে নিয়ম-কানুন মানার বালাই নেই। অফিস যাওয়া-আসা করতে গিয়ে দুই বেলা তাদের সাথে তর্কে জড়াতে হচ্ছে। তারা আমাদের কাছ থেকে দ্বিগুণ হারে ভাড়া আদায় করছেন। ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার নিয়মের তোয়াক্কাই করছেন না তারা।’

বাস চালক জাফর সিভয়েসকে বলেন, ‘মালিকরা আমাদের বলেছে ভাড়া ৬০ ভাগ বেশি নিতে। কিন্তু এখানে বেশি তো পাচ্ছি না। আমরা পাচ্ছি কম।’  

এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রতি দুই সিটে একজন করে যাত্রী নিচ্ছি। আগে দুই সিট মিলিয়ে ১০ টাকা আসতো। এখন দুই সিট মিলিয়ে আসছে ৮ টাকার মতো। মানে ভাড়া বাড়ার কারণে একজন ৫ টাকার ভাড়া ৮ টাকা করে দিচ্ছে। তাহলে প্রতি দুই আসনে ২ টাকা কম পাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা সবসময় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলেছি। একইভাবে সরকারের নির্দেশনা চালক ও শ্রমিকদের মেনে চলতে বলেছি। কিন্তু এটা অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত। আমরা চাই যত সিটি তত যাত্রী এই আলোকে সড়কে গণপরিবহনগুলো নামাতে। কিন্তু কিছু কিছু দুষ্ট চালক এ যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে।’

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়