Cvoice24.com

ক্ষতির ভয়ে সড়কে ‘হিসাব’ করে নামবে বাস 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ৮ এপ্রিল ২০২১
ক্ষতির ভয়ে সড়কে ‘হিসাব’ করে নামবে বাস 

থামছেই না করোনার সংক্রমণ। লকডাউনের ৪দিনে উল্টো দেখতে হয়েছে করোনার সংক্রমণের উর্বধগতি। এ অবস্থায় লকডাউনের মধ্যেই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শর্ত দিয়ে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যা কার্যকর হয়েছে বুধবার (৭ এপ্রিল) থেকে। কিন্তু করোনা ঠেকানোর নিয়ম মেনে দু’দিন বাস চালিয়েই হাঁপিয়ে উঠেছেন বাস মালিকরা। 

তাদের দাবি এরকম হাত-পা বেঁধে দিয়ে গাড়ি সড়কে নামানো হলেও যাত্রী সংকটের কারণে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন বিধি নিষেধের ফলে দু’দিনে চরম লোকসান গুনেছেন তারা। তাই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ‘হিসেব করে’বাস নামানোর সমন্বিত সিধান্ত নিয়েছেন বাস মালিকরা। অন্যদিকে লকডাউন চলাকালীন সময়ে সড়কে কম নামানো হচ্ছে টিকটিকি (সবুজ টেম্পু)। সব মিলিয়ে লকডাউন চলাকালীন সময়ে বাস মালিকদের নতুন সিদ্ধান্তে সড়কে ফের সৃষ্টি হতে পারে গণপরিবহন সংকট।  

অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলছেন, মালিক ও চালকদের এমন হটকারী সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে যাত্রীদের ফের বেড়ে যেতে পারে ভোগান্তি। 

এদিকে বাস মালিকরা বলছেন, লকডাউনের দু’দিনে (সোম ও মঙ্গলবার) সড়কে যাত্রী কম থাকার কারণে চরম লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। সকাল-সন্ধ্যা গাড়ি চালিয়ে তেলের টাকাটাও তোলা যায়নি কোন কোন রুটে। এ অবস্থায় ভাড়া সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মালিক ও চালকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। সমস্যা সমাধানে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বৈঠকে বসেন বাস মালিকরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে লকডাউন চলাকালীন সময়ে সড়কে কম বাস নামানোর।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল সিভয়েসকে বলেন, ‘লকডাউনে দু’দিন লোকসানের পর আমরা একটি বৈঠক করেছি। প্রথমে লকডাউনে বাস চলাচল বন্ধ রাখার চিন্তা করা হলেও পরে ভাবলাম এটা সরকারের বিপক্ষে চলে যায়। কিন্তু আমাদের তো বাঁচতে হবে। তাই গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না রেখে কাল (শুক্রবার) থেকে সড়কে কম গাড়ি নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বন্ধ দূরপাল্লার বাস, কর্মজীবীদের ভোগান্তি

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে চলাচলরত কাউন্টার সুবিধা সম্পন্ন দু’টি কোম্পানির বাস চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই বৈঠকে। অর্থাৎ শুক্রবার থেকে লকডাউনে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘মেট্রো প্রভাতী’ এবং ‘সোনার বাংলা’র বাস নামবে সীমিত পরিসরে। অন্যান্য লোকাল বাসগুলোর মালিকদের মধ্যে যাদের একাধিক বাস আছে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র একটি বাস সড়কে নামাতে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে আর্থিক ক্ষতি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে।

এদিকে লকডাউন চলাকালীন সময়ে যাত্রী সংকটের মুখে প্রায় কম গাড়ি বের করছে টিকটিকি-টেম্পু মালিকরাও। চট্টগ্রাম জেলা অটো টেম্পু অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সরকার সিভয়েসকে বলেন, ‘আমর রুটে ১২০ টি গাড়ি আছে। কিন্তু লকডাউনে এখানে ৬০ থেকে ৬৫টি গাড়ি চলাচল করছে। কারণ যাত্রী সংকটে সড়কে গাড়ি নিয়ে নামলেও আয় করতে পারছে না চালকরা। কাজেই লকডাউনে গাড়ি চালাতে আগ্রহী নয় চালকরা।’

এদিকে চালকদের  অভিযোগ- লকডাউনের বর্তমান পরিস্তিতিতে সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্য ৬টা পর্যন্ত গাড়ি চলাচল করছে সড়কে। কিন্তু পুরো দিনের ভাড়া অর্থাৎ আগের নিয়মেই ভাড়া দাবি করে গাড়ির মালিকরা। সাথে যাত্রী সংকট তো আছেই। তাই লকডাউনের কড়া নিয়ম মেনে সড়কে গাড়ি চালাতে অনিচ্ছুক অনেক চালক।

এদিকে চট্টগ্রাম নগরে বাস মালিকদের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজ্জামেল হক।  তিনি সিভয়েসকে বলেন-‘বাস মালিকদের এমন হটকারী সিদ্ধান্তে চরম গণপরিবহণ সংকট সৃষ্টি হতে পারে নগরীতে। এ সিদ্ধান্তে ভাড়া নৈরাজ্যকে ফুঁসলে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের যে  উদ্যোগ তা ভেস্তে যেতে পারে। কিন্তু বাস মালিক-চালক ও শ্র্রমিকদেরও তো বাঁচতে হবে। তাই মহামারীর এই  সময়ে একটি সমন্বিত উদ্যেগ নিতে হবে।’

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়