Cvoice24.com

হেফাজতকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আহলে সুন্নাতের স্মারকলিপি

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ৩ মে ২০২১
হেফাজতকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আহলে সুন্নাতের স্মারকলিপি

দেশের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী, জঙ্গিবাদী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়ে হেফাজতে ইসলামসহ সকল উগ্রবাদী সংগঠনকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত। 

রবিবার (২ মে) রাত সাড়ে ১০টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।  

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পীর তরিক্বত আল্লামা অধ্যক্ষ আব্দুল করিম সিরাজনগরী এবং মহাসচিব পীরে তরিক্বত আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর নির্দেশে নির্বাহী মহাসচিব আল্লামা আ ন ম মাসউদ হোসাইন আল্ ক্বাদেরীর নেতৃত্বে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকেই আব্দুল্লাহ বিন সাবা নামক ইয়ামেনী ইয়াহুদি মোনাফেককর্তৃক ইসলামে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা শুরু হয়। ইতোপূর্বে দয়াল নবীজি ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন, ইয়াহুদীগণ ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তম্মধ্যে ৭২ দলই হবে বিভ্রান্ত। এদেশে জামাতী, হেফাজতী, কওমি, আহলে হাদীস (সালাফী) জঙ্গীবাদী গোষ্ঠীগুলো সেই ভ্রান্ত ৭২  দলেরই প্রতিনিধিত্ব করে। এদেশের জামাত, কওমি, হেফাজতী, আহলে হাদীস (সালাফীগণ) ও সকল জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী সেই উগ্রমতবাদেরই ধারক বাহক। যা তাদের অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ডে প্রমাণিত। সেই উগ্র-মতবাদ প্রচার প্রসারের লক্ষ্যেই ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।

বিগত ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামকর্তৃক শাপলা চত্বরের তাণ্ডব জাতি প্রত্যক্ষ করেছিল। বায়তুল মোকাররমে কোরআন শরীফে অগ্নি সংযোগ, বাসে অগ্নি সংযোগ সহ আশেপাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকার গাছপালা নিধন, দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এক নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যার সাথে ইসলামের দূরতমও কোন সম্পর্ক নাই। ইসলামের দৃষ্টিতে কারো জান-মাল-ইজ্জতে আঘাত করা হারাম। সরকারের সময় উপযোগী সাহসী পদক্ষেপের কারণে দেশ ও জাতিসমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পায়। 

গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ও তার পরবর্তীতে একে কেন্দ্র করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বি-বাড়িয়া ও চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে- রাষ্ট্রীয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট করে তাও ইসলাম সম্মত নয়। অথচ তারা ‘হেফাজতে ইসলাম’ দাবিদার।

২৬ মার্চ পরবর্তী কর্মসূচীতে তাদের দাবি— হেফাজতের ২০ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়। সেই রক্তের সাথে বেঈমানী করে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে রিসোর্টে যায় তাদের নেতা মামুনুল হক, কথিত চুক্তি ভিত্তিক বৌ নিয়ে। মাইন্ড ফ্রেসের নামে জেনা ব্যাভিচারে লিপ্ত হন তিনি। অথচ ‘হেফাজত’ ইসলামী সংগঠন দাবি করলেও তারা এ ব্যাপারে ইসলাম সম্মত কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। মামুনুল হকের বিরুদ্ধেও হেফাজতে ইসলাম কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী উল্টো সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা দাবি করে, ২৬ মার্চ তাদের কোন কর্মসূচী ছিল না এটা সুস্পষ্ট মোনাফিকী চরিত্র। 

এতেই প্রতীয়মান হয়, তারা ইসলামের হেফাজত নয় বরং ইসলামের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে তাদের ক্ষমতা দখলই ছিল মূল লক্ষ্য। এই কওমি ও জামাতীরাই এক সময় ঘোষণা করেছিলো— ‘আমরা হবো তালেবান- বাংলা হবে আফগান’। ইতোমধ্যে জাতির কাছে সুস্পষ্ট হয়েছে— ‘সকল কওমি জঙ্গি না হলেও কিন্তু সব জঙ্গিই কওমি জামাতি ও সালাফি থেকে সৃষ্ট’। এসব সংগঠনগুলো আজ জঙ্গি প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তাই সরকারের এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কওমি মাদরাসার সাথে সংশ্লিষ্টদের জাতিগঠনের মূল ধারায় একিভূত করতে হবে। 

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, মানবিক বিয়ে বলতে ইসলামে কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই। বরং শরীয়ত সম্মত ‘ইসলামী বিয়ে’ই হলো একমাত্র বিয়ে। এর বাইরে চুক্তিভিত্তিক বিয়ে মানেই হলো জেনা ব্যভিচার তথা হারাম। তথা কথিত ইসলামী নেতা হয়ে এমন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডের তীব্রনিন্দা ও উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। 

উল্লেখ্য, স্মারকলিপি প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য যথাক্রমে পীরে তরিক্বত আল্লামা সৈয়দ ফকির মুসলিম উদ্দিন আহমদ নুরী আল্ ক্বাদেরী, পীরে ত্বরিক্বত আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ আব্দুর রহমান আল্ ক্বাদেরী, পীরে ত্বরিক্বত আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ মো’তাসিম বিল্লাহ রাব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মুফতি কাজী আবু জাফর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, অধ্যাপক এম এ মোমেন, সাংগঠনিক সচিব মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মতিন, আহলে সুন্নাত আইনজীবী কাউন্সিল এর আহবায়ক অধ্যক্ষ ড. শাহ জালাল, সিনিয়র অ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সমাজ কল্যাণ সচিব মুহাম্মদ আবদুস সালাম সেলিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়