Cvoice24.com

বাবুলের অভিনয়ের ফাঁদে আটকে ছিল তদন্ত

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ১৩ মে ২০২১
বাবুলের অভিনয়ের ফাঁদে আটকে ছিল তদন্ত

ফাইল ছবি

২০১৩ সাল থেকে উন্নয়কর্মী গায়েত্রীর সঙ্গে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের পরকীয়ার বিষয়টি মিতু ও তার পরিবার জানলেও খুনের পেছনে প্রথমে জামাতাকে সন্দেহ করেননি মোশাররফ-সাহেদা দম্পতি। শুধু মিতুর মা-বাবা নয় বিভ্রান্ত হয়ে মামলার মূল মোটিভ থেকে দূরে ছিল তদন্ত সংস্থাও। মূলত মিতু হত্যার পর বাবুলের প্রতিক্রিয়া ছিল স্বজন হারানো শোকে কাতর মানুষের মতো। মিতুর দাফনের সময় হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা।

বাবুলের আর্তনাদ কান্নার অভিনয়ে পরিবার ও পুলিশ বিভ্রান্ত হয়েছিল। আর এ সুযোগে বাবুল স্ত্রী হত্যাকাণ্ডকে তার জঙ্গি বিরোধী অভিযানের জেরে ঘটেছে বলে প্রচার করেছিল। সেকারণে মূল মাস্টার মাইন্ড হয়েও গত পাঁচ বছর ধরে ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এটাকে বাবুলের অভিনয় ফাঁদ বলছে পিবিআই। 

বুধবার রাতে একটি টেলিভিশনের টকশোতে এসে মিতুর মা সাহেদা মোশাররফ ও পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার এসব কথা জানান।

২০১৩ সাল থেকে গায়েত্রীর সঙ্গে বাবুলের প্রেম। এতো কিছু জানার পরও কেন মিতু হত্যা মামলায় তার বাবা-মা বাদি না হয়ে বাবুল হলেন। এর জবাবে সাহেদা মোশাররফ বলেন, ‌‘যখন আমার মেয়ে মারা যায় তখন আমাদের মাথা ঠিক ছিল না। এছাড়া বাবুল আক্তার যে নাটক শুরু করেছিল, কান্নাকাটি করেছিল তাতে ওই সময়ে তাকে সন্দেহ করিনি। সে তখন বলেছিল মিতুকে জঙ্গিরা মেরে ফেলেছিল। মিতুকে মেরাদিয়ার যে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল সেখানে গিয়ে বাবুল আক্তার তার কবরে লাপিয়ে পড়ে। সে তখন চিৎকার করে বলতে থাকে— মিতু তুমি আমাকে নিয়ে চলো, আমি থাকতে পারব না। তার এই নাটকে আমরা সন্দেহ করতে পারিনি সে একাজ করছে।’

একই প্রসঙ্গে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘মিতুর খুনের পর স্পটে আমি নিজেও পিবিআই প্রধান হিসেবে সিনিয়রদের সঙ্গে ঢাকা থেকে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তখন বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে জঙ্গি বিরোধী টিম লিডার হিসেবে ভালো কাজ করছিলেন। তার টিমের সদস্য ছিল বর্তমান মামলার আইও সন্তোষ চাকমা, মহিউদ্দিন সেলিমসহ পিবিআইর বর্তমান চৌকস অফিসারগণ। তার টিমের প্রত্যেক অফিসারই নিজ গুণে বলীয়ান। বাবুলের টিম চট্টগ্রামে ক্লুলেস মার্ডার ডিটেক্ট করা, জঙ্গি অভিযান করে ব্যাপক সুনাম কুড়ান। সে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল এটি হয়তো জঙ্গিদেরই কাজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া বাবুল আক্তার ওই সময়ে প্রিয়জন হারানোর যে আচরণ করেছিল, শোক প্রকাশ করেছিল তাতে করে তাকে সন্দেহ করার কোনও অবকাশ ছিল না। মিতুর মা যেটা বলেছেন, তারাও ওই সময়ে তাকে সন্দেহ করেনি যেমন আমরাও তেমন। বলা চলে তার অভিনয়ের ফাঁদে পড়েছিলাম সবাই। সেকারণে এতোদিন সে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। আমরাও সবার মতো বিভ্রান্ত ছিলাম। এরপরও সেই বিভ্রান্তি কাটিয়ে তদন্তে আসল রহস্য উন্মোচিত করলাম। যার ফল হলো, বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করা। আমরা নিশ্চিত হয়েছি তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়