Cvoice24.com

মুসাকে না চেনার রহস্য উন্মোচন করতেই ফাঁসলেন বাবুল আক্তার

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৪৬, ১৩ মে ২০২১
মুসাকে না চেনার রহস্য উন্মোচন করতেই ফাঁসলেন বাবুল আক্তার

মুসা বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠ সোর্স ও তার বাসায় নিয়িত যাতায়তকারী। মিতু খুনের কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত সংস্থা ডিবি মুসার সম্পৃক্তা নিশ্চিত হয়ে মুসার ভিডিও ও ছবি বাবুলকে দেখায়। কিন্তু তিনি মুসাকে চেনার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। অথচ মুসা যে বাবুল আক্তারের সোর্স ও ঘনিষ্ঠ সেটা তদন্ত সংস্থা শতভাগ নিশ্চিত হয়। কেন বাবুল আক্তার খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত মুসাকে না চেনার ভান ধরছেন? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গত চারমাস ধরে পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ছাড়াও এই মামলার তদন্তে একযোগে কাজ করে ঢাকার চারটি, গোপালগঞ্জ ও খুলনার দুটি ইউনিট। তারা একইসঙ্গে বাবুল আক্তার, ব্যবসায়িক পার্টনার সাইফুল ও মুসার আত্মীয় গাজী আল মামুনকে নজরদারির আওতায় আনে।

এক টিভি টকশোতে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, ‘মামলাটি মূলত পাঁচ বছরের তদন্তের কথা বলা হলেও মূল তদন্তটা হয়েছে গত ডিসেম্বর থেকে। এ চার মাসেই বাদি বাবুল আক্তারই যে কালপ্রিট সেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে আইনি জটিলতা এড়াতে আগের মামলার ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়ে নতুন করে মামলা করা হয়েছে। আগের মামলার সমস্ত তথ্য প্রমাণ নতুন মামলায় যুক্ত হবে। তাকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মামলার ভেতরে ঢুকেই দেখি, মিতু হত্যার কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দাতা যে মুসা, তাকে ভিডিও ও ছবিতে স্পষ্ট করেই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু মিতুর স্বামী মামলার সংবাদদাতা (বাদি) তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তারকে মুসার ভিডিও ও ছবি দেখানো হলেও তিনি তা সুকৌশলে এড়িয়ে যান। তাকে না চেনার ভান করেন। অথচ আমরা ডিজিটাল ও অ্যানালগ দুই লিংক পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হয়েছি বাবুল আক্তারের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল এই মুসা। সে বাবুলের সোর্সের পাশাপাশি নিয়মিত বাসায় যেত আর বাজারও করে দিত। কিন্তু বাবুল তা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যান। এটাই আমাদের সামনে বড় রকমের প্রশ্ন হিসেবে দাঁড়ায়, রহস্যের দানা বাঁধে।’

বনজ কুমার আরও বলেন, ‘এরপর আমরা মুসার সাথে বাবুলের এই খুনে সম্পৃক্ততা কি— তা খুঁজতে সোর্স লাগায়। সেই সূত্রে সন্ধান পাই তার ব্যবসায়িক পার্টনার সাইফুলের। তার মাধ্যমে বাবুল তিন লাখ টাকা মামুন নামে মুসার এক আত্মীয়কে দেয়। তারা আমাদের কাছে স্বীকার করেন যে, বাবুলের ব্যবসার লাভের তিন লাখ টাকা মুসার আত্মীয় মামুনকে খুনের তিন দিন পর বিকাশের মাধ্যমে যশোর থেকে দেন সাইফুল। এই টাকা দেওয়ার কারণ ও মুসাকে বাবুলের না চেনার ভান ধরা। এই দুইটি ইস্যুই সন্দেহভাজনের তালিকায় আসে বাবুল আক্তার।’

পিবিআই প্রধান বলেন, ‌‘এরপর তাকে বাদি হিসেবে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয় যেতে বলা হলে তিনি ব্যস্ততার কারণে সময় চান। সে অনুযায়ী সোমবার সেহেরি খেয়ে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে ৯ টার মধ্যে চট্টগ্রামে পৌঁছান। এরপর দিনভর তাকে আমাদের নির্ধারিত কিছু প্রশ্ন ছিল তা করা হয়েছিল। কিন্তু বাবুল আক্তার সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। এতে আমরা নিশ্চিত হই তিনি এই হত্যাকাণ্ডের কালপ্রিট। সেকারণে তাকে পিবিআই হেফাজতে নেওয়া হয়।’ 

এরআগে বাবুল যে তিন লাখ টাকা মুসাকে খুনের দিন পর দিয়েছিল পিবিআইকে ও আদালতে তা মামুন ও সাইফুল বলেছেন। এর দুই দিন পর বুধবার বাবুলের করা মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার পর দুপুরে মিতুর বাবা বাবুল আক্তারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মূহুর্তে গিয়ে তা দেননি৷ সেকারণে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আনা হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়