Cvoice24.com

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা মুছাসহ মিতু হত্যা মামলার তিন আসামির

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১২ জুলাই ২০২১
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা মুছাসহ মিতু হত্যা মামলার তিন আসামির

আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মুছাসহ তিন জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। 

সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান পিবিআইয়ের আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এরআগে গত ৫ জুলাই পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা তিন আসামির দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। 

যাদের বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগে আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তারা হলেন— কামরুল শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা ও মো. কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু শুরু থেকে নিখোঁজ। ভোলা গ্রেপ্তার হলেও জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। 

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা সিভয়েসকে বলেন, ‘গত ৫ জুলাই এজহারভূক্ত পলাতক তিন আসামির দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলাম। সোমবার শুনানি হয়েছে।’ 

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশটি যথাযত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশের সব স্থল ও বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। 

বাবুল আক্তারের গ্রেপ্তারের পর থেকে তাকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে থাকেন মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার। তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, ঘটনার পর ১৬ দিন পর্যন্ত পরিবারের সাথে ছিল মুছা। তখন, বাবুল আক্তার কয়েকটি ল্যান্ডফোন নম্বর থেকে মুছার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। এসময় মুছাকে সাবধানে চলাফেরা করার পরামর্শও দেন বাবুল। ধীরে ধীরে সব সামলে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয় তাকে।

পান্নার দাবি, দুই ভাইকে আটকের পর খুবই ভেঙ্গে পড়ে মুছা। এসময় মুছা সব ঘটনা ফাঁস করে দেয়ার হুমকিও দেয় বাবুলকে। এক পর্যায়ে স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথাও।

মুসার স্ত্রীর দাবি, ২০১৬ সালের ২২ জুন নগরের কাটগড় থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে মুছাকে তুলে নেয়া হয়। যদিও মুছাকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে সে সময় গণমাধ্যমে মুখ খুলতে চাইলে, বাবুলের ঘনিষ্ট দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ভয়ভীতি দেখান বলেও অভিযোগ করেন পান্না আকতার।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের প্রকাশ্য সড়কে গুলিতে ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা আক্তার মিতু। ওই দিন রাতে তার স্বামী তৎকালীন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। অনেকবার আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও কোন অগ্রগতি ছিল না। বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ অব্যাহতভাবে হত্যাকাণ্ডের জন্য বাবুল আক্তারকে দায়ী করতে থাকেন। তবে পুলিশের তরফ থেকে কখনোই এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি ওই সময়ে। গোয়েন্দা পুলিশ এরআগেও বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। শুরু থেকে চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। 

গত ১১ মে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততা মেলায় বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে আইনিভাবে বাদিকে গ্রেপ্তারের সুযোগ না থাকায় আদালতে তাকে হাজির করার পর ১২ মে মিতুর পিতার মোশাররফ হোসেনের করা নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। একই সাথে বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। 

গত ১২ মে মিতুর বাবার করা মামলায় বাবুল আক্তার ছাড়াও মামলার অপর আসামিরা হলেন— কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেসামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম, সাইফুল ইসলম সিকদার, শাহজাহান মিয়া। এদের মধ্যে ওয়াসিম ও আনোয়ার আগে থেকেই জেলে। সাকুকে ওই দিন রাতে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে এবং বাবুল আগে থেকেই পিবিআইয়ের হেফাজতে ছিল। এদের মধ্যে মুছাকে ২০১৬ সালের ২২ জুন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ থাকলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে বারবার। অন্যদিকে শুরু থেকে কালু অধরা। এছাড়া ভোলা ও শাহাজাহান জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক রয়েছেন। গত ২৯ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়