Cvoice24.com

লকডাউন ঘিরে মহাসড়কে জামায়াতের নাশকতার পরিকল্পনা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২৭ জুলাই ২০২১
লকডাউন ঘিরে মহাসড়কে জামায়াতের নাশকতার পরিকল্পনা

চলমান কঠোর লকডাউনে জনগণকে উসকে দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের পরিকল্পনায় নেমেছে জামায়াত ইসলাম। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম বা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছিল দলটির নেতাকর্মীরা। তা বাস্তবায়নে জামায়াত শিবিরের ১৯ নেতাকর্মী মিলিত হয়েছিলেন চান্দগাঁও এলাকার একটি বাসায়। যদিও তাদের পরিকল্পনা সফল করার আগেই পুলিশের জালে আটকা পড়তে হয়েছে তাদের। 

সোমবার (২৬ জুলাই) মধ্যরাতে চান্দগাঁও থানার অদুরপাড়ার মাজার গলির রাঙ্গুনিয়া বিল্ডিং নামে একটি ভবন থেকে জামায়াত-শিবিরের ১৯ নেতাকর্মীকে আটক করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছে, মূলত লকডাউন ঘিরে তাঁরা নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন। সরকারের কঠোর লকডাউন বানচালের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম বা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা ছিল তাদের মিশন। 

এই গোপন বৈঠকে ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর রুকন ও চান্দগাঁও উত্তর ইউনিটের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ ইয়াসিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও সহকারী বায়তুল মাল সম্পাদক এস্কান্দারও। তাদের সকলের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 
 
কারাগারে যাওয়া জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা হলেন মো. ইসহাক (৭৫), জামায়াতে ইসলামীর অদুরপাড়া ইউনিটের বায়তুল মাল সম্পাদক আবু হোসেন এরশাদ (৩৬), মো. মুজিবুল হক জাবেদ (৩২), মো. মোর্শেদুল আলম (৩২), আবুল কাশেম (২৭), মিরাজ (১৯), শওকত হোসেন (৪০), আলী আজগর (২৯), শহীদুল ইসলাম বেলাল (৩৫), আবুল সালেহ মো. রিফাত (১৮), আবু বক্কর ছিদ্দিক মমিন (২৩), আনোয়ার খালেদ (৪০), সাইফুল ইসলাম (৩৮), মো. ফরহাদুল ইসলাম (৩৩), জাকির হোসেন (৪৮) ও শেখ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (৫২)।

চান্দগাঁও থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল রাতে একটা বাসায় জামায়াত-শিবিরের লোকজন গোপন বৈঠকে বসেছিলেন। এ ধরনের তথ্য পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। বৈঠকে তাঁরা নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। নগরীর কয়েকটি জায়গায় দুয়েক দিনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল।এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু বই ও চাঁদা আদায়ের রসিদ জব্দ করা হয়েছে। এত দিন নিষ্ক্রিয় থাকলেও মূলত লকডাউন ঘিরে দলটি সক্রিয় হওয়া শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তাদের গোপনে তৎপরতা চালানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে; বিশেষ করে ওয়ার্ডভিত্তিক সাংগঠনিক কার্যক্রম সক্রিয় করা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আব্দুল কাদের মোল্লাসহ আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার ফাঁসি দেওয়া ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অন্যান্য নেতার জেলে আটক রাখার প্রতিবাদে নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রকাশিত বই ‘আমরা কী চাই, কেন চাই, কীভাবে চাই,’ গোলাম আযম সম্পাদিত ‘ইসলামী ঐক্য ও ইসলামী আন্দোলন’, ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’, সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদীর লেখা ‘সত্যের সাক্ষ্য’ ও জামায়াতে ইসলামী প্রকাশিত দুটি বই পাওয়া যায়। এ ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের রসিদ পাওয়া গেছে।

একসময়কার শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জামায়াত-শিবির। গত ১০ বছরে চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে কোনো মিছিল-মিটিং কিংবা সভা-সমাবেশ করতে পারেনি দলটি। এমনকি ঘরোয়া বৈঠকের খবর পেলেও পুলিশ অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের আটক করেছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়