Cvoice24.com

স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের করা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ৩ নভেম্বর ২০২১
স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের করা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ

বাবুল আক্তার।

স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় নিজে বাদী হয়ে করা মামলায় পিবিআইয়ের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে বাবুলের করা আবেদনটিও খারিজ করা হয়েছে।    

বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন। 

এরআগে গত ১৪ অক্টোবর কারাগার থেকে বাবুল আক্তার তার করা মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া ফাইনাল রিপোর্টের ওপর নারাজি আবেদন করেছিলেন। 

বাবুলের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘বাবুল আক্তারের করা নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে আদালত পিবিআইয়ের দেওয়া ফাইনাল রিপোর্টটি গ্রহণ করেননি। সেটা খারিজ করে দিয়ে ফের তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন।’ 

তবে পিবিআইয়ের পর বাবুলের করা মামলাটি কোন সংস্থা দিয়ে তদন্ত করাবে তা স্পষ্ট করেননি এ আইনজীবী। তিনি বলেছেন, ‘আদালতের লিখিত আদেশ পাবার পর সেটা আইনগতভাবে যেটা হয় সেটা হবে।’ 

আরও পড়ুন : স্ত্রী হত্যা মামলায় পিবিআইয়ের প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে বাবুল

অন্যদিকে বাদীর করা আবেদন খারিজ করে দেওয়া হলেও অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল বলছেন, ‘আমাদের আবেদনটা খারিজ করে দিলেও মূলত আবেদনের মূল ম্যারিট ছিল বাবুল আক্তারের করা মামলার পুনঃতদন্ত করা। এখন আদালত সেটারই মৌখিক আদেশ দিয়েছেন। বাকিটা লিখিত আদেশ পেলে জানা যাবে।’  

আদালতের এই আদেশের মাধ্যমে বাবুলের করা মামলার তদন্তের পাশাপাশি মিতুর বাবার করা মামলাটিও একই সাথে চলবে বলে জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান। 

এরআগে করা নারাজির আবেদনের কারণ সম্পর্কে শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেছিলেন,  ‘বাবুলের করা মামলায় ৫১ জনের বেশি সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিলেও কেউই বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। হঠাৎ করেই সাড়ে চার বছর পর দুজনের সাক্ষী নিয়ে বলা হলো এই হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্তা রয়েছে। আমরা সেকারণেই নারাজির আবেদন করেছি।’

আরও পড়ুন : পুলিশকে বাবুল আক্তারের অবিশ্বাস, মামলার নথিপত্র যাবে জুডিশিয়াল হেফাজতে 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তখন পদোন্নতি নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন বাবুল আক্তার। হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই। সেই সময় দুই আসামি ক্রস ফায়ার নিহতের পাশাপাশি বেশ কজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। 

পরে আদালতের আদেশে মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভার নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ বছরের মাথায় গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। এর পরদিন ১২ মে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

ঢাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই চট্টগ্রামে বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় সেদিন জমা দিয়েছিলেন পিবিআইর পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সন্তোষ কুমার চাকমা। এরপর ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন একটি হত্যা মামলা করেন। যাতে বাবুলকে প্রধান আসামিসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়। বাবুল সেই মামলায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। 

আরও পড়ুন : বাবুল আক্তারের করা মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিল পিবিআই

গত ২৩ অগাস্ট বাবলু আক্তারের করা ওই মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে আসামিদের দেওয়া ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদনের নকলের (কপি) জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। বাবুলের পক্ষে করা সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দিগুলোর নকল সরবরাহের আদেশ দেন। একইদিন বাবুলের করা মামলার নথিপত্র বিচারিক হেফাজতে রাখতে তার আইনজীবীর করা আবেদনও মঞ্জুর করেন আদালত।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়