হাফ ভাড়ার দাবিতে চেরাগীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা
সিভয়েস প্রতিবেদক
গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার বিষয়ে দাবি না মানায় রাজপথে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা। ছবিঃ সিভয়েস
হাফ ভাড়া ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে ‘হাফ ভাড়া চাই, চট্টগ্রাম’ এর পূর্বঘোষিত কর্মসূচীতে আজ বুধবার সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জমায়েত হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের একদল কর্মী সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করে।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) সাধারণ শিক্ষার্থীরা চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে সরে এসে মিছিল নিয়ে লালদিঘির পাড়ে এসে সমাবেশ শেষ করেন। সমাবেশ থেকে আগামী ২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারক লিপি পেশ এর কর্মসূচি ঘোষণা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা শুধুমাত্র ঢাকা নয় সারাদেশে গ্রাম-মফস্বল পর্যায়েও গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস, নিরাপদ সড়ক ও গাড়ি চাপায় শিক্ষার্থী হত্যায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী অবিধা ফাইরুজ বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম, তখন ছাত্রলীগের একদল কর্মী সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তারা ব্যর্থ হয়। এরপর আমরা চেরাগী থেকে মিছিল নিয়ে নিরাপদে সরে আসি।’
কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী আবিদ হোসেন বলেন, ‘কেবল ঢাকায় শর্তযুক্ত হাফ পাসের দাবি মেনে নেয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন। অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করে ছাত্রদের দাবি মেনে নিতে হবে।’
চট্টগ্রাম কলেজের আরেক শিক্ষার্থী শারমীন আলম বলেন, ‘হাফ ভাড়া কার্যকরের ঘোষণা মালিক সমিতি নয় সরকারের কাছ প্রজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে আসতে হবে এবং তাতে কোনো শর্ত জুড়ে দেওয়া চলবে না এবং তা সারাদেশের জন্য অভিন্ন হতে হবে।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি সরকার মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রুদ্র সিভয়েসকে বলেন, `আন্দোলনের মাঝামাঝি সময়ে একদল ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থী বেশে পোগ্রাম পন্ড করার চেষ্টা করে। এতে লালদিঘির পাড়ে এসে মিছিল-সমাবেশ শেষ করে শিক্ষার্থীরা।’
যে নয় দফা দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা—
দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে শিক্ষার্থীসহ সকল সড়ক হত্যার বিচার করতে হবে এবং পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, ঢাকাসহ সারাদেশের গণপরিবহনে (সড়ক, নৌ, রেল) শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে, গণপরিবহনে নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুততম সময়ে নিশ্চিত করতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সকল যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে, পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং নির্মাণের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে, দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে, বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএর সকল কর্মকাণ্ডের উপর নজরদারি রাখতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে ঢাকাসহ সারাদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা অবিলম্বে সয়ংক্রিয়, আধুনিকায়ন ও পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করতে হবে ও ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা নিশ্চিত করতে একে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে হবে।
-সিভয়েস/এসআর