Cvoice24.com

চলন্ত মাইক্রোবাসে যাত্রীবেশে ডাকাতি, মারধর করে লুট নেয় সর্বস্ব

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ১৩ জানুয়ারি ২০২২
চলন্ত মাইক্রোবাসে যাত্রীবেশে ডাকাতি, মারধর করে লুট নেয় সর্বস্ব

ডাকাত দলের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার।

মাইক্রোবাসের চালক হেল্পারের সহযোগিতায় যাত্রীবেশে ভেতরে বসে থাকে। পরে কয়েকজন যাত্রী তাদের গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলে কিছুদূর যেতে না যেতেই যাত্রীদের মাথায় বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে আঘাত করে লুটে নেয় সর্বস্ব। চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতির এমন কৌশলের বর্ণনা দেয় ডাকাত চক্রের ৬ সদস্য। 

আজ বৃহস্পতিবার নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) মো. শামসুল আলম এ কথা জানান।

এর আগে, গতকাল বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের অলঙ্কার মোড় থেকে ওই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে নগর গোয়েন্দা, আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন— মো. শাহ আলম আকন (৩২), আবুল কালাম (৪৭), মো. জাকির হোসেন সাঈদ (৩৬), মো. আল আমিন (২৯), মিজানুর রহমান (৫৩) ও নাহিদুল ইসলাম ওরফে হারুণ (৩১)।

সংবাদ সম্মেলনে শামসুল আলম বলেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানার দুবাই প্রবাসী হোসেন মাষ্টার নগরের পাহাড়তলী থানার অলংকার মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন গাড়ির জন্য। সেসময় একটি মাইক্রোবাস ১শ’ টাকা ভাড়ায় তাকে তার গন্তব্যস্থল জোরারগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। ভিতরে আরও যাত্রী দেখে তিনিও উঠে পড়েন সরল বিশ্বাসে। মাইক্রোবাসে যাত্রী বেশে থাকা ৪ ডাকাত হাতুডি ও স্কু ড্রাইভার দিয়ে গুরুতর আঘাত করে তার কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা, ২টি স্বর্ণের আংটি, ১টি মোবাইল ফোন ও তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার উত্তর বেতিয়ারা এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।

‘পরে ভুক্তভোগী হোসেন মাষ্টারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। পরের দিন (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় চমেকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত হোসেন মাষ্টারের ছেলে মঞ্জুর হোসেন বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় ডাকাতি ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার উক্ত ঘটনায় জড়িত চার জনসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। এসময় তাদের কাছ থেকে হাতুড়ি, স্কু ডাইভার, প্লাস, ২টি টিপ ছুরি, ১টি গামছা, ১০ টি মোবাইল সেট ১ টি পাসপোর্ট এবং ভিসার কপি উদ্ধার ও ১টি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শাহ আলম, আবুল কালাম, জাকির হোসেন ও আল আমিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রবাসী হোসেন মাষ্টারের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘গ্রেপ্তার মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী ও খুলনার খালিশপুর থানায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণের দোকান লুট, হালিশহরের ব্যাংক ডাকাতিসহ একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় একাধিক দস্যুতা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।’ পরে গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার, মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর ও দক্ষিণ) মুহাম্মদ আলী হোসেন, উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো. আব্দুল ওয়ারীশ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) পংকজ দত্ত, অতি উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) নোবেল চাকমা প্রমুখ।

-সিভয়েস/একে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়