Cvoice24.com

টিকা পায়নি, তাই যত আসন তত যাত্রীর নির্দেশনা মানছে না চট্টগ্রামের পরিবহন শ্রমিকরা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:০২, ২৬ জানুয়ারি ২০২২
টিকা পায়নি, তাই যত আসন তত যাত্রীর নির্দেশনা মানছে না চট্টগ্রামের পরিবহন শ্রমিকরা

গাদাগাদি করে যাত্রী, হেলপারের মুখে নেই মাস্ক।

চট্টগ্রামের গণপরিবহনগুলোতে মানা হচ্ছে না ওমিক্রন ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনা। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা নিজেদের স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই নেই তাদের। করোনা টিকার সনদ আর যতো আসন ততো যাত্রীর বাধ্যবাধকতার তো ধারই ধারেন না তারা। সব রুটের গণপরিবহনেরই একই অবস্থা।

গণপরিবহন নেতাদের দাবি, চট্টগ্রামে মাত্র ৬০ শতাংশ গণপরিবহন শ্রমিক টিকার আওতায় আসেনি। তাদের অনেকেরেই এনআইডি কার্ড নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসনে দেনদরবার করেও গণপরিবহন শ্রমিকদের বিশেষভাবে টিকাদানের ব্যবস্থা করাতে পারেন নি তারা। সবশেষ তারা এই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছেন। এরপরও টিকাদানের বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি। তাই নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে না পেরে ইচ্ছে করেই যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়ের বিধিও মানছেন না। আগের মতো গাদাগাদি করে যাত্রী তুলছেন।

জানা গেছে, প্রতিটি গাড়িতে চালক, কন্ট্রাকটর ও সহযোগী মিলে তিনজন লোক থাকে। বিআরটিএর রোড পারমিট অনুসারে চট্টগ্রামে ১ হাজার ১৮১টি গণপরিবহন রয়েছে। কিন্তু রোড পারমিট ছাড়া আরো ১ হাজার ৩১৯টি গাড়ি চলছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামের রাস্তায় বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার গণপরিবহন চলছে। এসব গাড়িতে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকাদান শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে টিকা পেতে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের একজন শ্রমিকও এখনো টিকা পায়নি। এটি খুবই দুঃখজনক। যেহেতু আমাদের শ্রমিকরা টিকা পাচ্ছে না, তাই আমরাও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছি। নিয়ম তো সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। চালক-হেলপারের টিকার সনদ বাধ্যতামূলক করার আগে তো গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, গণটিকা দেয়ার সময় সরকার আমাদের গণপরিবহন শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট কোন টিকার জায়গা ঠিক করে দেয়নি। আমাদের পতেঙ্গা এলাকায় যদি নির্দিষ্ট একটা কেন্দ্র করা হতো তাহলে আমাদের অধিকাংশ শ্রমিক টিকা পেয়ে যেতো। আমাদের শ্রমিকরা অবহেলিত থাকবে, টিকা পাবে না; এটা মানা যাবে না।

এদিকে গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মমিনুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, গণপরিবহনের শ্রমিকদের টিকা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ছয় উপজেলা ও মহানগরের দুটি কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সকলেই টিকার আওতায় আসবেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল সিভয়েসকে বলেন, আমাদের ৬০ শতাংশ শ্রমিক এখনো টিকার আওতায় আসেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন। আশা করবো সমস্যাটির সমাধান হবে।

গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকার ব্যাপারে বক্তব্য নিতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, আমি এখন মাঠ পরিদর্শনে আছি। এ বিষয়ে আমি বক্তব্য দিতে পারবো না।

সিভয়েস/টিএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়