Cvoice24.com

নুর জাহান গ্রুপের তিন ভাইয়ের পকেটে জনতা ব্যাংকের ৩২৬ কোটি টাকা, ৫ মাসের আটকাদেশ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
নুর জাহান গ্রুপের তিন ভাইয়ের পকেটে জনতা ব্যাংকের ৩২৬ কোটি টাকা, ৫ মাসের আটকাদেশ

ঋণখেলাপির দায়ে চট্টগ্রামের নুরজাহান গ্রুপের তিন কর্ণধারের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের আটকাদেশ দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান বুধবার এই আটকাদেশ দেন। ৩২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে জনতা ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।

আটকাদেশ প্রাপ্তরা হলেন— নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমদ, পরিচালক টিপু সুলতান এবং ফরহাদ মনোয়ার।
 
আদালতের তথ্যমতে, ৩২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পাওনার বিপরীতে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে জারি মামলা দায়ের করে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটির লালদীঘি শাখার দায়ের করা মামলা নম্বর ২৯৩/২০১৯। বুধবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করলে আদালত পাঁচ মাসের আটকাদেশ দেন।

উল্লেখ্য, নুরজাহান গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাসমির ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের কাছে ৩২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পাওনার বিপরীতে ২০১৩ সালে অর্থঋণ মামলা দায়ের করে জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটির লালদীঘি শাখার দায়ের করা মামলায় ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার রায় হয়। 

রায়ের ৬০ দিনের মধ্যে বিবাদী সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ না করায় ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট এই জারি মামলা দায়ের করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এই মামলায় ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে কোন সম্পত্তি বন্ধক নেই। ডিক্রিদার ব্যাংক হলফনামা যুক্ত দরখাস্তে বলেছেন তারা দায়িকদের (বিবাদী) কোন সম্পত্তির সন্ধান পাননি। তাই অর্থঋণ আদালেত আইনের ৩৪(১০) ধারার বিধান মোতাবেক দায়িকগণের বিরুদ্ধে সরাসরি গ্রেপ্তার এবং দেওয়ানী আটকাদেশ প্রদান করাই আইন সংগত বলে এই রায় দিয়েছেন আদালত। একই সময়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুর আদেশ দিয়েছে আদালত। 

এক সময়ের চট্টগ্রামের ভোগপন্যের বনেদি ব্যবসায়ীদের মধ্যে নুরজাহান গ্রুপ অন্যতম। ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় বড় অংকের লোকসান, ঋণের টাকায় জমি কেনা ও কর্ণধারদের ভোগবিলাসের কারণে গ্রুপটির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের বড় অংকের টাকা আটকে যায়। এই পর্যন্ত গ্রুপটির কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। 

নুরজাহান গ্রুপের তিনটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের কাছে অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৭৬৯ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৫৪৪ কোটি টাকা, একই গ্রুপের কাছে ন্যাশনাল ব্যাংক তিন শাখার ৫০০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক লালদীঘি শাখার ৩২৬ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের ১০৬ কোটি টাকা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকের বড় অংকের পাওনা রয়েছে।  
 
জানা যায়, মাররিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেড, নুরজাহান সুপার অয়েল লিমিটেড, জাসমির ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডসহ গ্রুপটির কমপক্ষে ২০ টি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু ব্যবসায়িক লোকসানে পড়ে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে খেলাপি হয়ে গত পাঁচ-সাত বছরে গ্রুপটির বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়