Cvoice24.com

কোরবানির পশুর অপেক্ষায় চট্টগ্রামের বড় বাজার

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ২৮ জুন ২০২২
কোরবানির পশুর অপেক্ষায় চট্টগ্রামের বড় বাজার

শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পশুর হাট সাগরিকা বাজারে। 

কেউ ত্রিপল টাঙাচ্ছেন; কেউবা মাটি খুঁড়ে পুঁতছেন বাঁশ। আবার কেউবা পশু বাঁধার খুঁটি মজুদ করছেন। এভাবেই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পশুর হাট সাগরিকা বাজারে। 

মঙ্গলবার বিকেলে বাজার ঘুরে দেখা গেছে—প্রায় প্রস্তুত চট্টগ্রামের বৃহত্তর এ বাজার। এখন শুধু অপেক্ষা কোরবানির পশু আর ক্রেতার। 

ইজারাদাররা বলছেন, দুই তিনদিনের মধ্যে নাটোর, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং উত্তরবঙ্গ থেকে গরু-মহিষ আসতে শুরু করবে। এরপরই ক্রেতা-বিক্রেতার আনোগোনায় জমে উঠবে এই পশুর হাট। 

কুষ্টিয়া থেকে ২৭টি গরু নিয়ে গতকাল সোমবার রাতে সাগরিকা হাটে পৌঁছেছেন মো. আনোয়ার। ৯০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত গরুর দাম হাঁকিয়েছেন তিনি।

আনোয়ার বেপারি সিভয়েসকে বলেন, কাল রাতে ২৭টি গরু নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে এসেছি। সড়কে যানজটসহ নানা সমস্যা থাকার কারণে আমরা হাট জমে উঠার আগেই চলে এসেছি। আজ দুপুর পর্যন্ত কোনো ক্রেতার আনাগোনা দেখিনি। হয়তো আর কিছুদিন পর থেকে পশুর হাট জমজমাট হবে এবং ক্রেতাদের ভিড় বাড়বে। এবারের কোরবানি ঈদে পশুর দাম কম থাকবে বলে দাবিও করেন তিনি।

এদিকে কুষ্টিয়া থেকে ৩৫টি গরু নিয়ে আসা বেপারি আজম আলী বলেন, পশু লালন-পালনে খরচ দিন দিন বাড়ছে। সেইসঙ্গে হাটে গরু আনা থেকে শুরু করে বিক্রির শেষ দিন পর্যন্ত নিয়মিত ৯-১১ জনের খরচ চালাতে হবে। তাদের জনপ্রতি প্রতিদিন ৬শ’-৭শ’ টাকা দিতে হবে। গরুর পর্যাপ্ত দাম পেলে কোনো রকম পোষাতে পারবো। আর যদি অল্প দামে গরু ছেড়ে দিতে হয়, তাহলে হয়তো দৈনিক খরচের টাকাও উঠবে না।

সাগরিকা পশুর হাটের ইজারাদারদের একজন ফজলে আলম চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, হাটে এখনও বাঁশ পোঁতানো, ত্রিপল টাঙানো থেকে শুরু করে সব লেনের নিচে ইটের আস্তর দিয়ে ফ্লোরিং করা হচ্ছে। এসব কাজ কালকের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আজ ভোরে কুষ্টিয়া থেকে কিছু গরু নিয়ে এসেছেন বেপারিরা। আগামী ১ তারিখ থেকে গরু-মহিষ-ছাগলে ভরপুর থাকবে হাট। সেই সঙ্গে আস্তে আস্তে আনাগোনা বাড়বে ক্রেতাদেরও। এবার নাটোর, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং উত্তরবঙ্গ থেকে পশু নিয়ে ব্যাপারীরা পশুর হাট সরগরম করবে।

এদিকে, গত ১৬ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৭ শর্তের ভিত্তিতে নগরে তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। যদিও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ১০টি অস্থায়ী হাট বসানোর জন্য আবেদন করেছিল।

চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরের তিনটি স্থায়ী হাটগুলো হলো— সাগরিকা বাজার, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের হাট। এছাড়া অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে সল্ট গোলা রেলক্রসিং-সংলগ্ন হাট, নগরের কর্ণফুলী গরুবাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট), ও দক্ষিণ পতেঙ্গার বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টি কে গ্রুপের খালি মাঠ।

অস্থায়ী পশুর হাট বসাতে জেলা প্রশাসনের ১৭ শর্ত

অস্থায়ী পশুর হাটবাজার প্রধান সড়ক থেকে ন্যূনতম ১শ’ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে বসাতে হবে। যাতে কোনো অবস্থাতেই প্রধান সড়কের যানবাহন চলাচলে বিঘ্নের সৃষ্টি না হয়। পশুর হাটবাজারের মাঠের চৌহদ্দির বাইরে ও রাস্তায় কোনো পশু রাখা যাবে না বা খুঁটি স্থাপন করা যাবে না। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এছাড়া কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার একমুখী চলাচল থাকতে হবে, অর্থাৎ প্রবেশপথ ও বহির্গমনের পথ পৃথক থাকতে হবে। পাশাপাশি সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে যেন কোনো রকমের জটলার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে; বৃদ্ধ ও শিশুদের পশুর হাটে প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে হবে; অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়কে উৎসাহ প্রদান করতে হবে; পশুর হাটে ইজারাদারদের নিজস্ব পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে; সব পশুর হাটে পশুর সুস্থতা যাচাই করার জন্য ভেটেরিনারি চিকিৎসক বা সার্জনের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; বাজার এলাকা নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করতে হবে; পশুর হাটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইজারাদার কর্তৃক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

রাস্তায় পশু পরিবহনের সময় ইজারাদার কিংবা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি কর্তৃক কোনো প্রকার পশু পরিবহনকারী গাড়ির পথ পরিবর্তন কিংবা নিজস্ব হাটে পশু নিতে বাধ্য করা যাবে না।

-সিভয়েস/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়