Cvoice24.com

মোহরায় ওসমানিয়ার পুল ভেঙে মরণফাঁদ!

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:১০, ১৮ আগস্ট ২০২২
মোহরায় ওসমানিয়ার পুল ভেঙে মরণফাঁদ!

৩২ বছরের পুরনো মোহরার ওসমানিয়া লোহারপুল। ১০ বছর আগেই মেয়াদ ফুরিয়েছে এই ব্রিজের। এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন অংশে। লোহার পাটাতন ভেঙে রীতিমতো মরণ ফাঁদে পরিণত হলেও বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। 

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম স্থানীয়দের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি পুনঃনির্মাণের কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় এই ব্রিজটি নেই।  তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলছেন, কেন কাজ করেনি তার জানা নেই। তবে একটা সময় এই ব্রিজটির কাজ সিডিএই করবে। 

বুধবার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা মেলে ব্রিজটির জরাজীর্ণ অবস্থা। পুলেও বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে ছোটবড় মিলে ৪০টি ছিদ্র। স্থানীয়রা জানান, ৩২ বছর আগে লোহার ব্রিজ স্থাপনের পর থেকে কালুরঘাট মোহরার শিল্প এলাকার শ্রমিকেদের পায়ে হেটে প্রধান যাতায়াতের পথ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এই লোহারপুল। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ব্রিজটি।  গত এক সপ্তাহ আগেও রাতে হেঁটে যাওয়ার সময় আব্দুল গফফার নামে এক বয়স্ক লোকের পা পাটাতনের গর্তে ঢুকে যায়। পরে লোহার পাত কেটে উদ্ধার করতে হয় তাকে।

জানা গেছে, ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের সময় উত্তর বঙ্গ থেকে আনা হয় লোহার ব্রিজটি। পরে বিএনপির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান এটি প্রতিস্থাপন করেন। দীর্ঘবছর পর ২০১২ সালে পুনরায় সংস্কার কাজ করা হয় এই লোহার পুলের। তবে জলাবদ্ধতার কারণে বেশি দিন টেকেনি পুলের সংস্কার কাজ।  স্থানীয়রা ছাড়াও প্রতিদিন ২ লাখ শ্রমিক যাতায়াত করছে এই পথে ধরে। ২০১৫ সালে সাবেক মেয়র আজম নাছিরের সময় নগরের ৪৮টি ওয়ার্ডের জরাজীর্ণ কালভার্ট সংস্কার ও পুনর্নিমাণ কাজে মোহরা এলাকার তিনটি কালভার্টের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে ২০১৭ সালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প শুরু হলে, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম পূর্ব মোহরা ও ওসমানীয়া পুলকে প্রকল্পের আওতাভুক্ত করেন। 

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহ আমিন সিভয়েসকে বলেন, আমাদের প্রকল্পের আওতায় থাকা মোহরা এলাকায় সকল ব্রিজ, কালভার্ট ও লোহার কালভার্টের কাজ শেষ। যদি এরকম কোন ব্রিজের কাজ অসম্পূর্ণ থাকে তা চট্টগ্রাম সিটি করপরেশন দেখবে।

সাবেক কাউন্সিলর মো.আজম সিভয়েসকে বলেন, আমি যতটুকু জানি এই ব্রিজটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে আওতায় আছে।  সেইসময়  চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়াম্যান আবদুর ছালাম পূর্ব মোহরা ও এই ওসমানীয়া পুল দুইটি প্রকল্পের আওতায় আনেন। পরে কি কারণে হয়নি তা জানা নেই।

সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘আমি সিডিএ থেকে অবসর নিয়েছি ৪ বছর হয়েছে। কিন্তু কেন আজও কাজ হয়নি সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে এইটা বলতে পারি একটা সময় পর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই ব্রিজটির কাজ করবে। 

এদিকে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে অনেক গুলো ব্রিজ করার ছিল। এই কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ব্রিজ, কালভার্টের কাজ হাতছাড়া হয়ে যায়। এখনো যেহেতু চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করেনি, সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকেই করতে হবে। স্থানীয় কাউন্সিলরকে মেয়র বরাবর লিখিতভাবে জানাতে হবে। এরপর মেয়রের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে কাজ শুরু করা যাবে। 

সিভয়েস/ ডিসি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়