Cvoice24.com

পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের করা মামলার আবেদন খারিজ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের করা মামলার আবেদন খারিজ

চট্টগ্রাম আদালত ভবন।

স্ত্রী হত্যা মামলায় কারাবন্দী সাবেক এসপি বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার সহ সংস্থাটির ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ফেনী কারাগারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ওই কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশের আবেদনও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা শুনানি শেষে আবেদনটি খারিজ করেন। 

এরআগে ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদনটি করা হয়। এক দফা পিছিয়ে আজ রবিবার শুনানি শেষে বাবুলের করা আবেদনটি খারিজ করে দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘হেফাজতে নির্যাতনের যে অভিযোগ বাবুল আক্তার করেছেন তা এক বছর ৪-৫ মাস আগের। এরই মধ্যে তিনি জামিন শুনানিতেও কখনও এই অভিযোগ তোলেননি। মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এই অভিযোগ তুলেছেন বাবুল আক্তার। এ কারণে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।’

একইসঙ্গে চট্টগ্রামের বাইরে হওয়ায় ফেনী কারাগারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশের আবেদনও নামঞ্জুর করা হয় বলে জানান পিপি। 

বাবুলের করা মামলায় বিবাদী করা হয়েছিল— পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার ও পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, পিবিআই মেট্রোর এসপি নাঈমা সুলতানা, মেট্রোর তৎকালীন পরিদর্শক (বর্তমানে ওসি-খুলশী) সন্তোষ কুমার চাকমা, তৎকালীন পরিদর্শক (বর্তমানে এসি-পাহাড়তলী) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই’র পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবীরকে। 

মামলার আবেদনে বিবাদীদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১০ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলা অফিসে বাবুল আক্তারের উপর নির্যাতন। স্ত্রী হত্যার ঘটনায় মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য বাবুল আক্তারের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগ করা হয়। আবেদনে বিবাদীদের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (১) ধারা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেছিলেন বাবুল আক্তার। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারেরই নাম। 

তদন্তে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছরের ১১ মে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ৯ জানুয়ারি বাবুলের করা মামলাতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল পিবিআই। পরবর্তীতে আদালত কয়েকদফা শুনানি পিছিয়ে তার নিজের মামলাতেই বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। পিবিআই তখন ২০১৬ সালের বাবুলের করা মামলায় তাকেই আসামি হিসেবে গণ্য করে। 

এর আগে গত বছরের ১২ মে করা মিতুর বাবা বাবুলের শ্বশুরের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পরবর্তীতে আদালত মিতুর বাবার মামলার সব তথ্য উপাত্ত বাবুলের করা আগের মামলায় একীভূত করে তদন্ত কাজ চালিয়ে নেওয়ার আদেশ দেন। এখন বাবুলের করা মামলার চূড়ান্ত অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে পিবিআই। 

মিতু হত্যা মামলায় স্বামী বাবুল আক্তার ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন— কামরুল ইসলাম মুছা, কালু, ওয়াসিম, শাহজাহান, আনোয়ার, এহতেসামুল হক ভোলা ও সাকি। 

গত বছরের মে থেকে গ্রেপ্তারের পর কিছু দিন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হলেও ওই বছরের ২৯ মে থেকে ফেনী কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার। 

সিভয়েস/এডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়