Cvoice24.com

পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই, সহিংসতার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা: সিএমপি কমিশনার

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই, সহিংসতার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা: সিএমপি কমিশনার

নগরের জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপের প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করছেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে প্রতিটি নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই আমরা প্রত্যাশা করি ভালো হবে। কিন্তু আমরা যেকোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি রাখি। একইসঙ্গে মহানগরের ২৬৬টি মণ্ডপের কোনটিকেই ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। প্রতিটি পূজা মণ্ডপ ঘিরেই চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে এবং কিছু মণ্ডপকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মণ্ডপের অবস্থা এবং লোক সংখ্যার যাতায়াতের কথা মাথায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ হিসেবে মণ্ডপগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের জেএমসেন হলে পূজা মণ্ডপের প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন।

পুলিশ কমিশনার বলেন, পূজা মণ্ডপকে ঘিরে সাদা পোশাকে পুলিশ, বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও সোয়াটের বিশেষায়িত টিমও কাজ করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেই ভাবেই স্থাপন করা হয়েছে। 

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, প্রতি মণ্ডপকে ঘিরে আমরা একটা শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করি। এ শৃঙ্খলা কমিটি আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। ইতোমধ্যে পূজার আয়োজনকারী যারা; তাদেরকে আমরা শৃঙ্খলা বিষয়ক কিছু অনুরোধ জানিয়েছি। যেমন, পূজা মণ্ডপে নারী-পুরুষের প্রবেশের জন্য আলাদা প্রবেশ-বাইরে যাওয়ার পথের ব্যবস্থা রাখা। সিসিটিভি ক্যামেরার একটি সংযোগ স্থাপন করা; যাতে কোনো ঘটনা ঘটলে পরবর্তীতে তার সূত্র পেতে পারি। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখা; যাতে তারা দর্শনার্থী স্থানে থাকে এবং কোনো কিছু সন্দেহজনক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে অবগত করা। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারাও কাজ করবে; তারা তথ্য সংগ্রহ করবে।’

প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নয়টি স্থান নির্ধারণ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তবে আমরা আয়োজকদের অনুরোধ করেছি, বিসর্জনের কার্যক্রম সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সমাপ্ত করে ফেলতে। তা হলে শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা দুই বিষয়েই আমরা সহজে কাজটি শেষ করতে পারবো। নগরবাসী শারদীয় দুর্গাউৎসব অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে সহযোগিতা করছেন। প্রতিটি উৎসবে চট্টগ্রামের মানুষজন অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে থাকেন, সেটা অব্যাহত থাকবে। সবার সঙ্গে মিলে এই উৎসবকে সার্বজনীন একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন করতে চাই।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যারা সৃষ্টি করে সেই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে কোনো মোটিভ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনের হাত অনেক লম্বা। কেউ কেউ হয়তো, কোনো কোনো সময় কিছু একটা কাজ করে আমাদের বিভ্রান্ত করছেন, অস্বস্তিতে ফেলছেন। আইনের চূড়ান্ত বিচারে তারা কিন্তু অবশ্যই পরাজিত হবেন। আমি মনে করি আইনগত একটা দিক আছে; অতীতের ঘটনা নিয়ে আইনগতভাবে যেভাবে এগোনো দরকার আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি।’

পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দিয়ে কমিশনার বলেন, ‘কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের জন্য কোনো কার্যক্রম বা ষড়যন্ত্র করলে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে, তাদের প্রতি কোন ছাড় নেই। পাশাপাশি আমি বিশ্বাস করি, অসাম্প্রদায়িক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ বিষয়গুলো যদি তারা আমলে নেয় এবং নিজেরা যদি সবসময় সতর্ক থাকে, তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্ট করার জন্য যারা পাঁয়তারা করে যে গুটি কয়েক লোক; তারা কখনো সাকসেস (সফল) হতে পারবে না।’

গতবার জেএমসন হলে যারা হামলা করেছে তারা সবাই জামিনে বেরিয়ে এসেছে; পূজা উদযাপন পরিষদ এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের প্রতি নজরদারি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, জামিনের ব্যাপারটি অন্য একটি প্রক্রিয়া। যারা জামিন নিয়ে বের হয়ে এসেছেন তাদের প্রতি আমাদের নজরদারি আছে। তারা অন্য কোনো পরিকল্পনা করছে কিনা, তাদের বর্তমান জীবনধারা নিয়ে আমাদের ফলোআপ আছে। আমরা সেভাবে কাজ করছি। একইসঙ্গে মামলাটির শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়