Cvoice24.com

নানীর কাছ থেকে ‘ছিনিয়ে নেওয়া’ সেই শিশু ৬০ দিন পর ফেনীতে উদ্ধার

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ২৩ নভেম্বর ২০২২
নানীর কাছ থেকে ‘ছিনিয়ে নেওয়া’ সেই শিশু ৬০ দিন পর ফেনীতে উদ্ধার

উদ্ধারকৃত শিশু জেমি

কুমিল্লার লাকসাম থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম আসার সময় গত ২২ সেপ্টেম্বর অপহরণ হয় তিন বছরের শিশু জেমি। ঘটনার ৬০ দিন পর জোরারগঞ্জ থানার বারৈয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে বন্দর থানা পুলিশ। অপরদিকে ফেনী সদর এলাকায় একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় শিশু জেমিকেও।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালে নগরের ইপিজেড থানায় সিএমপির উপ কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সুলতানা এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। 

অপহরণকারী ওই ব্যক্তির নাম জয়নাল আবেদীন ওরফে সুমন (২৭)। সুমন ফেনীর ধলিয়া ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ মুন্সী বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে।

শিশু জেমিকে তার শালীর মেয়ে পরিচয় দিয়ে ১২ বছর ধরে সন্তান না হওয়া ফেনী সদর এলাকার বাসিন্দা আমেনা আক্তার ওরফে খালেদার কাছে দত্তক দেয়ার নাম করে ৩০ হাজার টাকা দেয় সুমন।

সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিবরণ দিয়ে শাকিলা সুলতানা জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১ টায় কুমিল্লার লাকসাম থেকে ট্রেনে চট্টগ্রামে আসার পথে অপহরণকারীর সাথে শিশু জেমির নানীর পরিচয় হয়। অল্প আলাপে হয় ঘনিষ্ঠতা। ট্রেনে জেমি কান্না করতে থাকার সুযোগে অপহরণকারী জয়নাল আবেদীন প্রকাশ সুমন (২৭) তাকে কোলে নেয়। এরই ফাঁকে সুমন কৌশলে জেমির নানীর তার অপর মেয়ে গার্মেন্টসকর্মীর বন্দর থানার কলসিদিঘীর পাড় এলাকার বাসায় যাবে তা জেনে নেয়। অপহরণকারীও একই এলাকায় যাবে বলে জেমির নানীর বিশ্বাস অর্জন করে। 

তিনি আরও জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে তারা ট্রেন থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনে নামে। লোকাল বাসে করে ইপিজেড এলাকায় নামে। তখনও শিশু জেমি অপহরণকারীর কোলেই ছিল। তারা বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে কলসিদিঘী রোডে প্রবেশ করে। জেমির নানী সামনে হাঁটছিলেন। তখন অপহরণকারী পিছন দিয়ে কোলে থাকা শিশু জেমিকে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরে শিশু জেমির পিতা বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০০৩) এর ৭ ধারায় মামলা করেন। 

সিএমপির উপ কমিশনার জানান, শিশু জেমির অপহরণের সংবাদে তদন্তে নামে বন্দর থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অপহরণকারীকে শনাক্ত ও শিশু জেমিকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন। প্রচারণার জন্য বন্দর থানা পুলিশ স্মরণাপন্ন হয় মিডিয়া কর্মীদের। ট্রেনস্টেশন, বাস স্টপেজ ও সম্ভাব্য স্থানসমূহের সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে কয়েক দফা কুমিল্লা জেলার লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

এই কর্মকর্তা আরও জানান, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সোর্সের মাধ্যমে গত ২২ নভেম্বর জোরারগঞ্জ থানার বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে অপহরণকারী মো. জয়নাল আবেদীন প্রকাশ সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে, ফেনী সদর এলাকায় দত্তক দেয়া ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। 

অপহরণকারীকে আদালতে প্রেরণ এবং উদ্ধারকৃত শিশু জেমিকে আদালতের মাধ্যমে তার অভিভাবকের হেফাজতে প্রদানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়