Cvoice24.com

রিজার্ভ এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলার— চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ৪ ডিসেম্বর ২০২২
রিজার্ভ এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলার— চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী

পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভার মঞ্চে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে ক্ষমতায় এসে রির্জাভ বাড়িয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনো ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রির্জাভ আমাদের আছে। একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আমি আর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। তারা বলছে— ব্যাংকে টাকা নাই। অথচ এ কয়েকদিনে যারা ব্যাংকে টাকা তুলতে গেছে সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে। গুজব রটিয়ে চোরকে চুরি করার সুযোগ করে দিচ্ছে বিএনপি নেতারা।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন ৯৬ সালে সরকার গঠন করলাম তখন আমার রির্জাভ কত? ২ পয়েন্ট ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা কষ্ট করে রির্জাভ বাড়ালাম। আসলো খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ২০০১ এ। সেটাও আমাদের দেশ বেচার মুচলেকা দিয়েই এসেছিল। ক্ষমতায় এসেই কীভাবে মানুষ খুন করেছে। আপনাদের এ চট্টগ্রামের এমন কোনো নেতাকর্মী নাই যাদের উপর তারা হামলা করে নাই আর যাদেরকে তারা আক্রমণ করে নাই। হত্যা করে নাই। তাদের হাত থেকে তো কেউ রেহাই পায় নাই। এই হত্যা খুন এটাই তারা ভালো জানে। ওটাই তারা করে গেছে। কিন্তু এ দেশের মানুষের জন্য তারা কোনো কাজ করে নাই।’ 

জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনি ক্ষমতায় আসে তখন দেশের উন্নতি হয়। আমরা যখন দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসি এ রিজার্ভ তখন মাত্র ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল; আমরা সেটাকে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়িয়েছিলাম। তখন করোনাকালীন সময়ে পৃথিবীর বহু উন্নত দেশ ধনী দেশ বিনা পয়সায় কাউকে কোনো ভ্যাকসিন দেয় নাই। কিন্তু বাংলাদেশ দিয়েছে। আমি দিয়েছি নগদ টাকা দিয়ে কিনে।’

রির্জাভের টাকা যে খাতে খরচ হয়েছে তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রির্জাভের টাকা খরচ করেছি মানুষের জন্য খাদ্য, বিনা পয়সায় খাদ্য দিয়েছি। বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি ব্যবসায়ীদের। তাদের ব্যবসা বাণিজ্য যাতে চলতে পারে। শ্রমিকদের বেতন তাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। কৃষকদেরকে আমরা টাকা দিয়েছি। যাতে তারা চাষবাস করতে পারে। আমরা ওষুধ কিনেছি। ভ্যাকসিন কিনেছি। সিরিঞ্জ আনতে হইছে। সেখানে কিনতে পারিনি স্পেশাল প্লেন পাঠিয়ে দিয়ে আমরা নিয়ে এসেছি। কেন? আমার দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। এখনো আমরা করোনার টেস্টিং, ভ্যাকসিন বিনে পয়সায় করি। কই? আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপ থেকে শুরু করে কেউ দেয় নাই। একমাত্র বাংলাদেশ; বিনে পয়সায় আমরা দিচ্ছি। কাদের জন্য? জনগণের জন্য। কারণ আমরা জনগণের জন্য কাজ করি। জনগণের কথা ভাবি।’

বাজেটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বাজেট কত ছিল মাত্র ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আমরা সেখানে বাজেট দিয়েছি কত ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার। আমি জিজ্ঞাসা করি— বিএনপি ক্ষমতায় থাকেলে এতো বাজেট দিতে পারতো? পারতো না। আমরা সকল সরকারি কর্মচারী অফিসার সকলের বেতন ভাতা বাড়িয়েছি। স্কুল কলেজ জাতীয়করণ করেছি। আমাদের প্রত্যেকটা কাজ ছিল গণমুখী। তারা তো করেই নাই, উল্টো আরও এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।’

বাংলাদেশের মানুষ ভূমিহীন থাকবে না বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের কল্যাণ চাই। দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। এ বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। আমরা বিনে পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি। একটি মানুষও ঘরবিহীন থাকবে না। ৩৫ লক্ষ মানুষকে আমরা ঘর করে দিয়েছি বিনে পয়সায়। জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করেছে।’

এরআগে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অপেক্ষার প্রহর শেষে পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভায় এসে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলেটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ শেষে তিনি হেলিকপ্টারে করে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নামেন। সেখান থেকে সিআরবি হয়ে পলোগ্রাউন্ডে মাঠে আসেন। মাঠে এসেই ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং চার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। 

এরআগে বেলা ১২টা থেকেই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের স্থানীয় এমপি, কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় জনসভার আনুষ্ঠানিকতা। বক্তব্যে নেতারা চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া নানা প্রকল্পের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। আগামীতেও প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান জানান। 

এদিন সকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুপুরের জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ডমুখী স্রোতে যুক্ত হয়েছেন। ভোরের আলো ফুটতেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রং বেরংয়ের টি শার্ট ও বাদ্য যন্ত্র নিয়ে জনসভাস্থলের আশাপাশে এসে অবস্থান নিতে থাকেন। এরপর সিআরবি, পুরোনো রেলস্টেশন, টাইগারপাস দিয়ে বানের স্রোতের মত নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। এসময় স্লোগোনে-স্লোগানে মুখর জনসভাস্থল ও চট্টগ্রামের রাজপথ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়