Cvoice24.com

৬ বছর আগে শিশুকে ধর্ষণের পর খুন, দুইজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ৪ অক্টোবর ২০২৩
৬ বছর আগে শিশুকে ধর্ষণের পর খুন, দুইজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

চট্টগ্রামে ছয় বছর আগে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার দুই আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের আবারও একই সাজা দেন আদালত। তবে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।

দণ্ডিত দুইজন হলেন— মো. জীবন (২৫) ও ইমন হাসান (২৬)।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, খুনের শিকার ওই শিশু নগরের পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলা শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটি এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো। সে বাসার পাশে আতাতুল ক্যাডেট মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২০১৭ সালের ১৩ জুন বেলা সোয়া ১২টার দিকে ওই শিশু কেনাকাটার জন্য দোকানের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। দুপুর ২টার পরও বাসায় ফিরে না যাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে খোঁজ না মেলায় ওইদিন সন্ধ্যায় পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির বাবা।

তাদের বাসার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে নিখোঁজ শিশুর সন্ধানে নামে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে শিশুটিকে বাসার পাশে নঈমী ভবন নামে একটি মার্কেটের ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি পুলিশ। পরের ১৪ জুন রাত পৌনে ৩টার দিকে শিশুটির মামা নঈমী মার্কেটের সামনে গেলে তার নাকে গন্ধ লাগে। বিষয়টি তিনি ভগ্নিপতিকে (শিশুটির বাবা) জানান। এরপর পরিবারের সদস্যরা তিনতলা নঈমী ভবনের তৃতীয় তলায় সিঁড়িঘরের পাশে ময়লার স্তূপে কাঠের বাক্সের ভেতর থেকে প্রায় ৩৯ ঘন্টা পর নিখোঁজ শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করেন।

পরে খুন করে লাশ গুম করে রাখার অভিযোগ এনে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুর বাবা। পুলিশ ওই বছরের ২২ জুন জীবন এবং পরদিন ইমনকে গ্রেপ্তার করে। নিহতের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়।

পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর এবং পরবর্তীতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ চন্দ্র ঘোষ তদন্ত করে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে শিশুটিকে ফুসলিয়ে মার্কেটের ভেতর নির্জনস্থানে নিয়ে দু’জন মিলে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই বছরের ২৫ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আরও তিনজনের সাফাই সাক্ষ্য শেষে আজ আদালত এ রায় দেন।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম জানান, আসামিদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের আবারও একই সাজা দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাদের সাজামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: