মনের খুশিতে চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে তারা
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
ট্রেন দেখতে এসে উৎসুক জনতার ভিড়ে কেউ কেউ চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুঁড়ে মারে। আবার মাদক সেবনের পর কোন কোন মাদকসেবীরাও ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে। রবিবার (২৩ জুন) রেলওয়ে থানায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী এ তথ্য জানান। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা ঈদ স্পেশাল ট্রেনে দুই পাথর নিক্ষেপকারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রেস ব্রিফিং করে রেলওয়ে পুলিশ।
রেলওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী বলেন, গত ২২ তারিখ পাথর নিক্ষেপের ভিডিও ফেইসবুকের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেন চকরিয়া থেকে বড়ইতলী এলাকা অতিক্রম করার সময় দুইজনকে পাথর নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। রেলওয়ে পুলিশ তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- পেয়ার মোহাম্মদ পেয়ারু (২২) এবং আব্দুল্লাহ আল নোমান (২২)। দুজনের বাড়িই চকরিয়ার বড়ইতলী ইউনিয়নে। কক্সবাজার লাইন নির্মাণকাজের সময় মালামাল চুরির ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা আছে পেয়ারুর বিরুদ্ধে।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ মতো অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ দেখাতে পারলে আমরা সাথে সাথে পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রতিনিয়ত আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলছে।
এদিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ে পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের মধ্যে সাতকানিয়া, রামু, ডুলহাজরা, চকরিয়া ‘স্টোন থ্রোয়িং’ জোন রুপ ধারণ করছে। এইসব এলাকা ঘনবসতি হওয়ার কারণে ট্রেন দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করে। ফলে এদের মধ্যে অনেকে ইচ্ছে করে পাথর নিক্ষেপ করে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, গত ৬ মাসে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় চট্টগ্রাম—কক্সবাজার রেললাইনের পাথর নিক্ষেপের ঘটনায়। অন্য মামলাটি চট্টগ্রাম—ঢাকার রেলপথের বারবকুণ্ড এলাকায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনায়। এসব মামলায় সম্প্রতি ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহীদুল ইসলাম সিভয়েস২৪-কে বলেন, ট্রেনের পাথর নিক্ষেপ অপরাধে কঠোর শাস্তির বিধান আছে। এইসব অনেকেরই অজানা। ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারায় চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা আছে।
এছাড়াও পাথর নিক্ষেপের কারণে কোন রেলযাত্রী মারা গেলে, ৩০২ ধারায় ফাঁসিরও বিধান আছে— বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।