দেওয়ানহাট রেললাইনে শিক্ষার্থীরা
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (দুপুর ১২টা) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দেওয়ানহাট রেললাইনে কর্মসূচি পালন করছেন। এতে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে বটতলী রেলস্টেশন ছেড়ে যেতে পারছে না কোনো ট্রেন। প্রবেশও করতে পারছে না।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, পাহাড়তলী ডক ইয়ার্ড থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনে আসার পথে দেওয়ানহাটে মহানগর এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটিকে আটকে দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দুপুর সাড়ে ১২টায় ওই ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট মোড় অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বহন করা শাটল ট্রেনটিকে দেওয়ানহাটে না নিয়ে ষোলশহর স্টেশনে নামিয়ে দেয়। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাব্যাপী রেললাইন অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ঘণ্টা খানেক পর দেওয়ানহাটের দিকে রওয়ানা দেয় ট্রেনটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহর অভিমুখে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শাটল ট্রেনটি ছাড়ে। সকাল ১০টার দিকে দুই নম্বর গেট ষোলশহর স্টেশন পৌঁছালে ট্রেনটি থেমে যায়। দেওয়ানহাটের দিকে ট্রেন না যাওয়াতে স্টেশনেই অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে পড়ে সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে দেওয়ান হাটের দিকে ট্রেনটি নিয়ে যায় রেলওয়ে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন রাসেল বলেন, ‘রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম যে আমাদের যাতে দেওয়ানহাটে নামিয়ে দেয়। কিন্তু তারা সেটা না করে আমাদের ষোলশহরেই নামিয়ে দেয়। যদি আমাদের দেওয়ানহাটে না নেওয়া হয় তাহলে আমরা লং মার্চের হুঁশিয়ারি দিই। শেষে বাধ্য হয়ে তারা দেওয়ানহাটের দিকে ট্রেন ছাড়ে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘রেল কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে না জানানোর কারণে তারা আসলে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দীর্ঘসময় ষোলশহরে ট্রেন আটকে রাখে। এ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাতেও জড়ায় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শেষে দেওয়ানহাটের দিকে ট্রেন যেতে অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।’
একই বিষয়ে স্টেশন মাস্টার শিরিন আক্তার সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘নিয়ম অনুসারে ক্লিয়ারেন্স ছাড়া কোনো ট্রেন অতিরিক্ত যাতায়াত করতে পারে না। তারা আগে থেকে ক্লিয়ারেন্স নেয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হালকা বাকবিতণ্ডাও হয়। পরে কর্তৃপক্ষ থেকে আদেশ এলে আমরা ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেই।’
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বুধবার (১০ জুলাই) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামেও এ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ৬ জুন থেকে বিভিন্ন সময় এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সর্বশেষ গত ৮ জুন চট্টগ্রাম ষোলশহর স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করলে ৩০ মিনিট আটকে থাকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস।